প্রাথমিক চিকিৎসা

প্রাথমিক চিকিৎসা কি ও কেন?  
কোন দুর্ঘটনা কবলিত ব্যক্তিকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ার পূর্বে বা ডাক্তার আসার পূর্বে রোগীর অবস্থানের উন্নতি ঘটানোর জন্য বা আর যাতে অবনতি না হয় সে জন্য যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা বলে। অন্য কথায় বলা যায় আকস্মিক কোন দুর্ঘটনায় বা রোগে, দুর্ঘটনা কবলিত ব্যক্তি বা রোগীকে মেডিকেল সাহায্য আসার পূর্ব পর্যন্ত যে সব সাহায্য সহযোগিতা দেওয়া হয় তাহাই প্রাথমিক চিকিৎসা।  আঘাত জনিত কারণে যাতে রোগীর জীবন নাশ না হয় অথবা বড় ধরনের কোন ক্ষতি সাধন না হয় যে জন্যই প্রাথমিক চিকিৎসা দরকার। প্রাথমিক চিকিৎসা দ্বারা রোগীর জীবন রক্ষা পায়। যেমন- আঘাতের কারণে অতিরিক্ত রক্ত পড়া বন্ধ করা যায়, ক্ষমস্থানকে বাইরের আঘাত বা সংক্রামন থেকে রক্ষা করা যায়। পট্টি লাগিয়ে আহত স্থান ঠিক রাখা যায়। অর্থাৎ আহত স্থানের প্রতিরক্ষা করা যায়। কাজেই প্রাত্যহিক জীবনে জরুরী অবস্থার মুখোমুখি দাঁড়াবার আত্মবিশ্বাস লাভের জন্য প্রাথমিক চিকিৎসা অপরিহার্য।  শিশুর সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা কবলিত হয়ে থাকে। কারণ স্বভাবতই তারা চঞ্চল, বেপরোয়া ও অবুঝ। এই শিক্ষার্থীরা যদি নিজেদের আঘাত জনিত ব্যাপারে নিজেরাই প্রাথমিক প্রতিবিধানের ব্যবস্থা নিতে পারে তা হলে অনেকটা আশঙ্কহীনভাবে চলা যেতে পারে। প্রতিটি শিক্ষার্থী যাতে প্রাথমিক প্রতিবিধানের কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পারে সে জন্য শিক্ষক বিশেষ যতœ নিতে তাদের তাত্তি¡ক জ্ঞানের সঙ্গে সঙ্গে ব্যবহারিক জ্ঞান ও শিক্ষা দেয়ার ব্যবস্থা করবেন। তা হলেই প্রতিটি শিক্ষার্থী ডাক্তার আসার আগে পর্যন্ত মূল্যবান সাহায্য করে সঙ্গীর বা অন্যদের জীবনের ঝুঁকি কমিয়ে সাহায্যের হাত বাড়াতে পারবে। তাদের বাড়িতেও সে দুর্ঘটনায় মূল্যবান অবদান রাখতে পারবে। 

প্রাথমিক চিকিৎসা উপকরণ ও ব্যবহার বিধি  
প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য কিছু উপকরণ প্রয়োজন হয় যার দ্বারা রোগীকে সাময়িকভাবে সুস্থ রাখা যায়। আসুন আমরা প্রাথমিক চিকিৎসার উপকরণ ও এদের ব্যবহার বিধি নিয়ে আলোচনা করি। প্রাথমিক চিকিৎসার উপকরণগুলির মধ্যে নি¤œলিখিত উপকরণগুলি প্রধান ভূমিকা পালন করে। 
  ডেসিং সামগ্রী
 লিন্ট  প্যাড
 স্পিøন্ট  ব্যান্ডেল
  ডেটল
  আয়োডিন
  বেনজিন
  ছুরি ও কাঁচি। 

১। ড্রেসিং সামগ্রী
  ডেসিং সামগ্রীর মধ্যে গজ, তুলা ইত্যাদি রয়েছে। ক্ষতস্থানকে জীবানুমুক্ত রাখার জন্য যে ব্যবস্থা নেয়া হয় তাকে ড্রেসিং বলে। ড্রেসিং এর ফলে-  রক্ত ক্ষরণ বন্ধ হয়।  জীবানু মুক্ত হয়।  ক্ষতস্থানে যাতে আর আঘাত না লাগে তার ব্যবস্থা করা হয়।  বাইরে থেকে দুষিথ বস্ত না লাগার ব্যবস্থা হয়।  
২। লিন্ট
  জীবানুমুক্ত বা ঔষধযুস্ত একখন্ড কাপড়ই হলো লিন্ট। ক্ষতস্থান ভাল করে পরিষ্কার করে ক্ষতস্থানে এমনভাবে লিন্ট স্থাপন করতে হবে যাতে ক্ষতস্থান সম্পূর্ণরূপ ঢেকে থাকে।   
৩। প্যাড
  ক্ষতস্থানকে আরাম দেওয়ার জন্য যে গদি ব্যবহার করা হয় তাকে প্যাড বলে। প্যাড তুলা  বা জীবানুমুক্ত নরম কাপড়ের হতে পারে। লিন্টের উপর প্যাড লাগাতে হয়। প্যাড ব্যবহারের সময় লক্ষ্য রাখতে হবে যেন, সম্পূর্ণ ক্ষতস্থান জুড়ে তা অবস্থান করে।  
৪। স্পিøন্ট
  ডাঙা অস্থিকে সোজা রাখার জন্য যে চটি ব্যবহার করা হয়, তাকে স্পিøন্ট বলে। স্পিøন্ট বিভিন্ন আকারের হয়। পাতলা কাঠ, হার্ডবোর্ড, বা বাঁশের চটা হার্ডবোর্ড দিয়েও তৈরী করা যায়। স্পিøন্ট ব্যবহার করার পূর্বে প্যাড ব্যবহার করতে হয়।  
৫। ব্যান্ডেজ
  লিন্ট, প্যাড বা স্পিøন্ট যথা স্থানে রাখার জন্য এবং ভাঙা অস্থি স্থির করে রাখার জন্য ব্যান্ডেজ ব্যবহার করা হয়। ব্যান্ডেজ ব্যবহারের সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন ক্ষতস্থানের ঠিক উপরে ব্যান্ডেজের গেরো না পড়ে। ব্যান্ডেজ প্রধানত: দু’ধরনের হয়ে থাকে।   
রোলার ব্যান্ডেজ ও ক্রিকোনী ব্যান্ডেজ।  

প্রাথমিক চিকিৎসার কি কি করণীয়  
ক.  প্রথমে মাথা ঠান্ডা রেখে কি করা কর্তব্য তা চটপট ঠিক করা। 
খ.  রোগীর চার পাশে ভিড়, গোলমাল, চিৎকার বা চেচামেচি না করা। 
গ.  রক্তপাত যাতে বন্ধ হয় তার ব্যবস্থা তাড়াতাড়ি করা। 
ঘ.  আঘাত বা ক্ষত খুব গুরুতর হলে সাবধানে রোগীকে নাড়াচাড়া করা। 
ঙ.  নিশ্বাস বন্ধ হয়ে গেলে কৃত্রিম উপায়ে তা চালিয়ে রাখার চেষ্টা করা। 
চ.  প্রয়োজন হলে রোগীর গায়ের জামা-কাপড় বা জুতো মুজা খুলে ফেলা। 
ছ.  ক্রমাগত ভরসা ও সান্তনা দিয়ে রোগীর মনকে প্রফুল্ল রাখা। 
জ.  যতটুকু জানা আছে ততটুকু চিকিৎসা করা, তার বাইরে না যাওয়া। 
ঝ.  যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রোগীকে কাছাকাছি কোন ডাক্তার খানায় বা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া। 
প্রাথমিক চিকিৎসার বিভিন্ন উপকরণ ছাড়াও ভিন্নভাবে দৈনন্দিন দুর্ঘটনায় কবলিত হলে করণীয় বিষয়গুলোর দিকে কিছুটা আলোকপাত করা বাঞ্ছনীয়।  

১। জীব জন্তুর কামড়  
জীব জন্তুর কামড়ের ভিতর পাগলা কুকুরের কামড় খুবই মারাত্মক। সময় মত চিকিৎসা না করালে জীবন নাশের কারণ হতে পারে। পাগলা কুকুর কামড়ালে জলাতঙ্ক রোগ হয়। এমনকি পাগলা কুকুর শরীরের কোথাও আচড় দিলেও এ রোগ হতে পারে। এছাড়া নেকড়ে, বিড়াল, বেজী, শিয়াল প্রভৃতি পাগলা হলে এদের কামড়েও জলাতঙ্ক রোগ হতে পারে। 
চিকিৎসা  
  • প্রথমে নিশ্চিত হতে হবে কুকুরটি পাগলা ছিল কি না।   
  • আহত স্থানটা যতটা সম্ভব নিচে রাখতে হবে।  
  • রক্তপাত হলে তা বন্ধ করার ব্যবস্থা করতে হবে।  
  • কার্যলিক সাবান না পরিষ্কার জল দিয়ে আহত অঙ্গটি ভাল করে ধুয়ে ফেলতে হবে। 
  • পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট গুড়ো করা ল্যুশন দিয়ে ক্ষতস্থান ধোয়া অবশ্য কর্তব্য।  
  • ক্ষতস্থানে সব সময় ড্রাই ড্রেসিং ব্যবহার করতে হবে।  
  • ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী মলম লাগাতে হবে। 
২। গরম তরল পদার্থ  
উত্তপ্ত তেল বা পানি, আলকাতরা, পিচ ইত্যাদি দ্বারা শরীর ঝলসে যেতে পারে। এসব জিনিসের দ্বারা আক্রান্ত ব্যক্তিকে নি¤œলিখিতভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা করানো প্রয়োজন।  
চিকিৎসা   
  • ফোস্কা পড়ে গলে গেলে জীবানুমুক্ত কাঁচি দ্বারা কেটে দিতে হবে।  
  • দগ্ধস্থানে পেনিসিলিন ব্যবহার করতে হবে।  
  • গদ্ধস্থান ঢেকে রাখতে হবে। 
  • রোগীকে মশারীর ভিতর রাখতে হবে।  
  • প্রচুর গম পানীয় বা কফি খেলে ভাল হয়। 
 
৩। বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম  
বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম দ্বারা আহত হলে নি¤œলিখিত চিকিৎসা করতে হবে।  
চিকিৎসা 
  • প্রথমে বিদ্যুতের মেইন সুইচ বন্ধ করতে হবে।  
  • মেইন সুইচ বন্ধ করা সম্ভব না হলে তড়িতাহত ব্যক্তিকে শুকনো বস্তু দ্বারা আঘাত করে আলগা করতে হবে। 
  • গরম কাপড় বা লেপ দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে।  
  • রোগীর শ্বাস-পশ্বাস না চললে কৃত্রিম উপায়ে শ্বাস-প্রশ্বাস চালানোর ব্যবস্থা করতে হবে।  
  • ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী মলম লাগাতে হবে।  

৪। অজ্ঞান হওয়া  
¯œায়ুতন্ত্র কোন কারণে অতিরিক্ত উত্তেজিত হলে বা কর্মহীন হয়ে পড়লে মানুষ তখন অজ্ঞান বা অচেতন হয়ে পড়ে। 
চিকিৎসা: 
  • রোগীকে আলো বাতাসে নিতে হবে।  
  • কৃত্রিম দাঁত থাকলে খুলে ফেলতে হবে।  
  • ভিড় কমাতে হবে।  
  • রক্তপাত হলে বন্ধ করতে হবে।  
  • রোগীকে শুইয়ে বহন করতে হবে।  

৫। পানিতে ডোবা   
  • পায়ের গোড়ালী উঁচু করে ধরতে হবে। 
  • মাথা নিচের দিকে থাকবে। 
  • মাঝে মাঝে পিঠে হালকা থাপ্পড় দিতে হবে। 
  • এতে গিয়ে খাওয়া পানি বের হয়ে যাবে।  
  • কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যবস্থা করতে হবে।  
  • ভেজা কাপড় চোপড় খুলে ফেলতে হবে।  
  • মেডিক্যাল সাহায্য না পাওয়া পর্যন্ত কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস চালিয়ে যেতে হবে।  
  • রোগীর গলা, মুখ, পরিষ্কার করতে হবে।  

৬। শরীর পুড়ে গেলে   
  • দগ্ধ স্থানের উপর হাত দিতে না দেওয়া।
  • ফোস্কা পড়ে ফেটে গেলে জীবানুমুক্ত কাঁচি দিয়ে কেটে দিতে হবে।  
  • দগ্ধ স্থানে পেনিসিলিন বা টেরামাইসিন মলম লাগাতে হবে।  
  • ক্ষতস্থান আলগা রাখা যাবে না।  
  • রোগীকে মশারীর মধ্যে রাখতে হবে।  
  • প্রয়োজনে ঘুম পড়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে।  
প্রাথমিক ভাবে নিন্মোক্ত কাজগুলো করা যেতে পারে: 
  1. Kjv Mv‡Qi Gu‡Ui im jvwM‡q w`‡j R¡vjv K‡g hv‡e|
  2. Pz‡bi cvwbi mv‡_ bvi‡Kj †Zj wgwk‡q jvMv‡j R¡vjv Dckg nq|
  3. ‡dv¯‹v c‡o †M‡j KzKwmgv cvZvi im, gay ev wkivc jvMv‡j R¡vjv hš¿bv K‡g hv‡e|
  4. cy‡o hvevi mv‡_ mv‡_ Ab¨ wKQy jvMv‡bvi Av‡M †Kiwmb ‡Zj jvwM‡q w`‡j wK¤^v KvuPv †Mvj Avjy evUv jvwM‡q w`‡j we‡kl DcKvi nq|
  5. ‡Mvei jvMv‡j wK¤^v cyBkv‡Ki cvZv †e‡U jvMv‡j fvj nq|
  6. Kvco-‡Pvc‡o nVvr Av¸b ‡j‡M †M‡j ‡`Šo‡`vwo Kiv hv‡e bv Kvib Zv‡Z Av¸b †e‡o hv‡e| Kv‡RB m‡½ m‡½ Av¸b jvMv Rvgv Kvco wQ‡o †dj‡e| bZzev gvwU‡Z MovMwo w`‡e|
  7. ‡Mvjvc cvwb I wZj ˆZj A_ev gvLb I gay wKsev gvZ ¸o I gvLb GKm‡½ wgkvBqv w`‡j R¡vjv hš¿bvi Aemvb n‡e|
  8. wW‡gi mv`v Ask Av¸‡b †cvov ¯’v‡b jvMv‡j R¡vjv hš¿bv `yi nq|
  9. ‡iwoi †Zj I gay wgwk‡q †cvov hvqMvq w`‡j m‡½ m‡½ R¡vjv hš¿bvi Aemvb n‡e|
৭। বিষ খেলে বা শরীরে বিষ ঢুকলে   
  • রোগীকে বমি করাতে হবে, যাতে বিষ পেট থেকে বেরিয়ে যায়। 
  • নি¤œলিখিত উপায়ে বমি করানো যায়: 
   - গলার মধ্যে আঙ্গুল প্রবেশ করিয়ে বমি করানো যায়। 
   - সামান্য গরম জলে লবন গুলে বা খাইয়ে বমি করানো যায়। 
   - ডিমের সাদা অংশ ও কুসুম একত্রে মিশিয়ে গরম দুধসহ খাইয়ে বমি করানো যায়। 
   - সরিষার তৈল খাইয়ে বমি করানো যায়। 


৮। fv½v ev gPKvi wPwKrmv
  1. †Kvb ¯’v‡b gPwK‡q †M‡j cvwb‡Z †b‡g mvZvi w`‡j gPKv‡bv fvj nq|
  2. mvZvi w`‡Z bv cvi‡j mn¨ nq Ggb Mig cvwb‡Z WyevBqv ivL‡e| AZci e¨v‡ÛR †eu‡a w`‡e|
  3. nvo fv½v †Zj bv cvIqv †M‡j LvuwU mwilvi †Zj gvwjk Ki‡e|

No comments: