অনন্ত আকতারের কবিতা



“সস্তায় পাওয়া মা”
===========
অনেক সহজে আর সস্তায় পাওয়া গেছে তাই
মাকে কখনোই দামি মনে হয়নি।
দাম দিয়ে কিনতেও চাইনি কখনও
তাই কখনও বলা হয়ে ওঠেনি-
“মা, আমি তোমাকে ভালবাসি”।
দাম দিয়ে কেনা অনেক কিছুকেই
হয়তো আমরা হাজার বার বলি
“ভালবাসি, ভালবাসি”
কারন! তাকে হারাবার ভয় আছে,
কিন্তু মা! সেতো হারাবার নয়।
তাই-
ছোটবেলায় বার বার পড়ার কথা শুনলে
সব রাগ গিয়ে পড়তো মায়ের উপর;
ভাত খেতে গিয়ে মাছ-মাংস না পেলে
সব রাগ গিয়ে পড়তো মায়ের উপর;
স্কুলের স্যার কান ধরে দাড় করালে
সব রাগ গিয়ে পড়তো মায়ের উপর;
কোন কারনে টেলিভিশনে
‘ম্যাকগাইভার’ কিম্বা ‘সংসপ্তক’দেখতে না পারলে
সব রাগ গিয়ে পড়তো মায়ের উপর;
ঘুড়ি উড়াতে গিয়ে সুতা কেটে গেলে
সব রাগ গিয়ে পড়তো মায়ের উপর;
নতুন কেনা শার্ট পছন্দ না হলে
সব রাগ গিয়ে পড়তো মায়ের উপর।
আর এখন-
সব রাগ সহ্য করার জন্যও
রাগ হয় মায়ের উপর;
মা যেন সব রাগ হজম করার এক 'প্রাকৃতিক যন্ত্র'
যাকে বার বার কষ্ট দেয়া যায়,
আর মা!
সে হাজার কষ্টের মাঝে সন্তানের মঙ্গল খোঁজে।
-অনন্ত আকতার (০৮০৫২০১৬২৩৫৯)


উড়ে যা, যারে পাখি
দিলাম তোরে ছেড়ে,
ভালবাসা উড়িয়ে দিলাম
গড়াই নদীর তীরে।
বালুচরে বাসা বেঁধে
থাকবি ভারি সুখে,
নদীর জলে ঠোঁট ডুবাবি
ফিরবি না আর বুকে।
তোর পায়েতে সোনার শিকল
দিলাম আমি খুলে,
উড়ে যা তুই ঐ পারেতে
পিছে আমায় ভুলে।
তোরই ডানাই পত্র লেখার
মনে ছিল আশা,
তুই বিহনে শুন্য বনে
ছড়াই ভালবাসা।।
------------------
অনন্ত আকতার
(০৫০৫২০১৫০০০০)




কেউ চেটে যায়
কেউ খেটে খায়
ভিন্ন ভিন্ন ঠোঁটে
দেখাইলো তেল
কি আজব খেল
মধ্যরাতের ভোটে।
যারা চেটে যায়
তারা ভয়ে নাই
খেলছে ভাল অংকে
আছেতো মজুদ
ডলার অযুত
সুইসের কোন ব্যাংকে।
যারা খেটে খায়
দর নাহি পায়
জীবন নাভিশ্বাস
কাল কি খাবো
কোথায় যাবো
নেই কোন আশ্বাস।
-অনন্ত আকতার
০৬০৮২০২২২২৫১-উত্তরা।








তুই নদী হলে আমি সাগর হবো
তুই বাতাস হলে আমি আকাশ হবো
তুই পথিক হলে আমি পথ হবো
তুই জোসনা হলে আমি চাঁদ হবো
তুই রোদ্দুর হলে আমি রবি হবো
তুই ঘাসফুল হলে আমি ফড়িং হবো
তুই কদম হলে আমি বর্ষণ হবো
তুই মুক্তো হলে আমি ঝিনুক হবো
তুই স্বপ্ন হলে আমি ঘুম হবো
তুই অসুখ হলে আমি ঔষধি হবো
তুই ঝর্না হলে আমি পাহাড় হবো
তুই নক্ষত্র হলে আমি নীহারিকা হবো
তুই ভালবাসলে আমি কবি হবো
তুই থেমে গেলে আমি বাকরুদ্ধ হবো
তুই ছেড়ে গেলে আমি সন্যাসী হবো।
-অনন্ত আকতার (১২০৮২০১৫২৩২৫)
!!স্বপ্নডানায় ভেসে ভেসে !! কবিতা#১৪
No photo description available.
Al



রসদ ভরি, রিফিল করি
আমার শুন্য বুক
দীঘির জলে ক্ষ্যান্ত করি
যন্ত্রণার অসুখ।
জীবন যাপন জটিল যখন
যান্ত্রিকতার ভীড়ে
ফুড়ুৎ করে উড়াল মারি
নিসর্গের-ই নীড়ে।
সেথায় আছে মা জননী
আছে পরিজন
গাছের ছায়ায়, মাটির মায়ায়
ভরাই দু-নয়ন।
সান্ধ্যকালে সূর্য ঢলে
ঢলে নিরবতা
শেকড় আমায় বাড়িয়ে দেয়
জীবন নদীর সোঁতা।
সেই সোঁতা-তেই পূর্ণ-দমে
আবার মজি কাজে
রিফিল করা হৃদয়খানি
মধুর সুরে বাজে।
-অনন্তআকতার
১৮০৮২০২২২১৩১
যশোর-ঢাকা হাইওয়ে।



তোমাদের কাঁচের শহরে
স্বপ্ন দেখি না আর প্রহরে
আকাশে টগবগে দিবাকর
সে ও মলিন শুষ্ক পাথর।
পিপীলিকার পথে হাঁটি
নিত্যদিন সতর্ক পরিপাটি
কেন যেন স্বপ্নেরা ভয়ে
আসে না আর ঘুমের নায়ে
এমন-ই কৃত্রিমতায়
দ্বিধা আর সংশয়
নিয়ে বাঁচি প্রতিদিন
সাথী-সঙ্গহীন
কোন এক পাখিডাকা এমন ভোরে
কার্তিক-কুয়াশায় যাবো ফিরে
মলিন কাঁচের দেয়াল চিরে
চিরচেনা ধরণির পরে
যেথায় মাটির ঘরে
শুকতারা ঝরে
আহারে!
১৫১০২০২২১৫৪৫উত্তরা



সূর্যটা ডুবে যায় টুপকরে
ধরণী আঁধার হয় হুটকরে
গো' ধূলি নেই তবু গোধূলি
ধোঁয়াশা এ নগরের অলিগলি
আহারে জীবন
আহারে।
প্রতিদিন সন্ধ্যার ডাকে
সূর্যটা সকাল আঁকে
ঘুমভেঙ্গে পাখি গায় গান
নতুন প্রেমের আহ্বান
আহারে জীবন
আহারে।
ফাল্গুনে বসন্ত নামে
প্রেমের চিঠি আসে- হলুদ খামে
মঞ্চ মাতায়ে রাখে সখীগণ
বৃত্তের পরিধিতে করে বিচরণ
আহারে জীবন
আহারে।
বেলাশেষে সব্বাই এক ফ্রেমে
জীবনের রেলগাড়ি যায় থেমে
কালোরাতে আন্ধারে
শেষ নিঃশ্বাসটাও- নিরবে ঝরে
আহারে জীবন
আহারে।
.
২৮১০২০২২১৫৫৯উত্তরা



বাহিঙ্গা
--------------
দুধকলা দিয়া‌ পু‌ষিতেছি কি বিষাক্ত কালসাপ
দংশ‌নে কি! মান‌চিত্রটা হ‌ইবে নতুন ভাগ
চট্টগ্রাম ঝু‌লিয়া আছে নড়বড়ে তার খু‌টি
ব‌হিঃশ‌ক্তি টা‌নি‌তে‌ছে তা, দি‌য়ে রো‌হিঙ্গা গুটি।
আমরা বোকারা ইয়াবা শু‌কিয়া সু‌খে বুদবুদ হই
‌সোনার বাংলায় সাপ ঢুকিলেও চুপ‌টি ক‌রিয়া রই।
ক‌রিতেছে ত‌ারা প্রাকৃ‌তিক ক্ষ‌তি, কা‌টিয়া বন-পাহাড়
মুস‌লিম হইয়া ক‌র‌িছে তাহারা কোরানে ইয়াবা পাচার।
‌বিশ্বমোড়ল সম‌বেদনায় মাথায় ঢা‌লিছে পা‌নি
‌কেউ‌তো দেয়না নায্য তা‌হাদের ভুখন্ডখান আনি।
আমরা গরীব মড়ার উপর ব‌সিল রো‌হিঙ্গা 'ঘা'
‌সেই ঘ‌া র‌সিয়া স্ব‌দেশ ভা‌সিয়া হই‌বে 'বা‌হিঙ্গা'।
/(সং‌ক্ষে‌পিত)




মেঘনা ব্যাংকেত্তে ফোন করে কয়
আপনি আমাগের ভিআইপি-
পিলাটিনাম কাছটোমার অয়
আপনারে এককান জারছি দিতি চায়
কোন্দলের! ছাপোট করেন কন ভাই
কোন ছাইজ দেবে শুনতি চায়।
মসজিদির খতিব সাহেব কয়
জারছি পিন্দনো, নিশান টানানো
যাবেনা- তাতে ঈমান নড়বেড়ে হয়
আবার শুনতিছি পবিত্র দেশ কচ্ছে
যারা খেলা দেকতি যাবে তাদের ওমরা ফ্রি দেচ্ছে
ভাইরে- কি যে করি
আমি কোনো দলের ছাপোট না-করি
ছা-পুষে চলি
সত্যি কতা বলি
কাতারে অচ্ছে খেলা
দল অচ্ছে মেলা
আরেক দল রাশিয়া
বিশ্বরে খেলে দেচ্ছে- কষিয়া
মোড়লরা খেলা দেকতেছে আঙ্গুল চুষিয়া চুষিয়া।

আর কিছু চাওয়া নেই, নশ্বর ধরার এজীবনে
ভাবি বসন্তে আমার একটা উঠোন হোক
সোনালি সোনালি ছড়ানো ধান আর
ছিটানো শস্যের সমাহার
এখানে ওখানে।
আর কিছু চাওয়া নেই, উঠোন জুড়ে থাকুক
একঝাঁক ঘুঘু, চড়ুই, দোয়েল, শালিক
যাদের চোখে খুঁজবো অনন্তরাজি
প্রতিটি ধূলিকণা ঘেঁটে ঘেঁটে
তুলে আনবো প্রশান্তি
তাতেই খুশি
অহর্নিশি।
.
অনন্তআকতার
১৮১১২০২২২৩০৮উত্তরা



রেললাইনের দুইটি পাটি যেমন বহমান
তোমার আমার মাঝে বন্ধু- তেমন ব্যবধান।
পাশাপাশি বসত মোদের একই ধাতুর গড়া
তবু তোমায় ছুইতে নারি- বাঁধা কঠিন বেড়া
তোমা-আমা দোলায় হৃদয় দখিনা পবন
শিহরিত হই দুজনেই- নামলে বরিষণ।
লক্ষ তারা সাঝের বেলা উদয় গগন ভরি
আমি-তুমি তুমি-আমি পরষ্পরে স্মরি।
কঠিন পাথর বুকের মাঝে যতন করে রাখি
দুই ভূবনে দুই বাসিন্দা তন্দ্রা বিনা পাখি।
মোদের পরে সওয়ার হয়ে চলে প্রেমের গাড়ি
আর জনমে গড়বো মোরা- ভালবাসার বাড়ি।
#-অনন্ত_আকতার
২৬১১২০২২২২৩২উত্তরা।




নীড়ে ফিরিয়াছে ব্যস্ত পাখিরা
সূর্য নামিছে পাটে
একাকী বসে বুনছি জীবন
সোনাই নদীর ঘাটে।
এ-ঘাট ও-ঘাট কত ঘাট ঘুরে
ক্লান্ত ফিরেছি নীড়ে
সন্ধ্যে বেলায় বিরহী পাখির
একাকীত্বের ভিড়ে।
কত কত দিন কাটিছে এমন
দিঘীর জলেতে নেয়ে
জীবনের স্বাদ আস্বাদনে
মায়ের বকুনি সয়ে।
গরু লয়ে মাঠে চরাতে চরাতে
কখন নামিছে সাঝ
সেইসব দিন, ছিল যে রঙ্গীন
মনে তা পড়িছে আজ।
বুনো ফুলগুলি বিকশিত হয়ে
মেলিতো পথের গায়
লতাপাতাগুলি পথের পরতে
জড়ায়ে ধরিত পায়।
গাছ কেটে গাছি ফিরিতো নীড়ে
চোমর পড়িতো ভূইয়ে
কুড়ায়ে তাহার মাতি খাইয়াছি
অমৃত স্বাদ লয়ে।
সেইসব দিন আসিবেনা ফিরে
যে-দিন গিয়াছে চলি
স্মৃতির খাতায় সোনার পাতায়
সযতনে রাখি তুলি।
.
অনন্ত আক্তার
১৭১২২০২২১৯০০যশোর-ঢাকা হাইওয়ে।




কিছুই আঁকোনা তুমি বহুদিন; আমার দেয়ালে।
স্রোতস্বিনীতে বয়ে গেছে
কোটি কোটি কিউসেক জল
হাজারে হাজারে শব ছাই হয়ে
উড়ে গেছে শ্মশানের বাতাশে
অজস্র নক্ষত্র উঁকি দিয়ে ফিরে গেছে
ঘোলজল রুপসার স্বচ্ছ হয়েছে ধীরে
তিলাঘুঘু হয়েছে দুই থেকে চার
তারপর আট, অজস্র
শুয়োপেকারাও হয়েছে প্রজাপতি
আপন খেয়ালে
কাল পেরিয়ে মহাকালে।
কিছুই আঁকোনা তুমি বহুদিন; আমার দেয়ালে।



পাতা খসে যায়
খসে যায় কিছু ক্ষণ
আবেগী প্রহর শেষে
সুখের পরশ এসে
জুড়ায় তনুমন
এইতো জীবন।
কখনও এই পথে
ভোর থেকে রাতে
প্রেমের পাখি গায়
জীবন গড়ার গান
ফুলের কলিরা ফোটে
অলি'রা আবেগে ছোটে
যখন-তখন
এইতো জীবন।
শঙ্খচিলের মত
মাইলকে মাইল শত
উড়ে উড়ে ফিরে
নিঃশব্দ নীড়ে
ডানার ক্লান্তি ঝেড়ে
প্রিয়ার আঁচলে
সুখ খোঁজে মন
এইতো জীবন।
বেলা শেষ হলে পরে
ইহ-দিন সাঙ্গ করে
সব্বাই যাবে ফিরে
মাটির কুঁড়েঘরে
জড়িয়ে কাফন
এইতো জীবন।।
২২১২২২১৯৪৩ঢাকা-যশোরহাইওয়ে



ডায়েরীঃ বিদায়ী প্রনাম
---------------------------
অতঃপর-
এমন শীত কুয়াশার মধ্যরাতে
তোমাকে বিদায়ী প্রনাম,
তোমার স্থলাভিষিক্ত নতুন কাউকে
ভাবতেই মনজুড়ে স্মৃতির কুয়াশারা
উড়ে উড়ে ভিড় করে নিউরণে।
কত দিন, কত রাতে-
তোমার সাজানো উঠোন জুড়ে
স্মৃতির কালিতে লেপ্টে দিয়েছি
একগাদা এলোমেলো শব্দ
তোমার শরীরে এখনো লেগে আছে
আমাদের সব সাদা-কালো-রঙ্গিন ইতিহাস।
তোমার বদন আজ বিষন্ন মলিন
ভুমিষ্ট নতুন শিশু আজ তোমার সামনে,
তোমার বুড়ো দাগ লাগা শরীরের উপরে
লটকিত হবে আজ এই কুয়াশার মধ্যরাতে।
একগাদা স্মৃতি এ্যলবাম বুকে নিয়ে
টেবিল ছেড়ে সাজানো আলমারিতে
এমন হাজারো শতাব্দীর ইতিহাসের
সাথে যুক্ত হয়ে তুমি আরেক ইতিহাস হবে।
আর নতুন ইতিহাসে-
আবার ভোর হবে,
আবার রূপসার ঘোলা জলের কাব্য হবে
আবার ধানসিড়িঁর বুকে ফিরে যাবে গাঙচিল
আবার কার্ত্তিক কুয়াশায় হারাবে 'অনন্ত'
আবার হবে বৈশাখী ঝড়ের বিপ্লবী শুভেচ্ছা
আবার অংকিত হবে নতুন ইতিহাস
নতুন ডায়েরীতে।
.....................
(অনন্ত_আকতার_৩১১২২০১৬১০২৭_খুলনা)



BackBencher
--------------------
'ব্যাকবেঞ্চার' ব্যাকে বসে ঘুমায় মহাসুখে
স্যার মহাশয় আগেই নিছে নামটি তাহার টুকে।
পাতি নেতা থেকে সে যে হবে বড় নেতা
ভবিষ্যতের ভাবনা ভেবে করে সমঝোতা।
সে যে হবে সোনার ছেলে! নেবে দেশের ভার
ফ্রন্টলাইনার ডাকবে তারে বস-মহাশয়-স্যার।
জেনেই গেছে সে আজিকে লাগবেনা তার জ্ঞান
পা চাটিলেই মিলবে যে পদ এনাফ পরিমান।
বড় নেতা চোর বাটপার দেশের কর্নধার
ব্যাকবেঞ্চার বুঝেই নিছে সেই-ই আসল স্যার।
Ananta Akter
070220230800uttara.





একদিন ভাটির জীবন ছেড়ে যেতে হবে মাটির ঘরে। কিছুই যাবে না সাথে, শুধু কর্মফল নামক ‘সওদা’ নিয়ে মহাজনের নিকট হাজিরা দিতে হবে। পুবাল বাতাশে সঠিক ভাবে বৈঠা না ধরতে পারলে জীবনের নাও সওদা নিয়ে মহাজনের সামনে দাঁড়াতে পারবে না। মহাজন এই নায়ে একবার-ই তেল ভরে দিয়েছে এবং তা একবারেই শেষ হয়ে যাবে।
মহাজ‌নের নাও নি‌য়ে আমার এই গী‌তিকাব্য:
--------------------------------------------
ভাটির দেশের নাইয়া আমি পাইয়া পুবাল বায়
মহাজনের নাও চড়িয়া কোন সুদুরে যাই।।
মহাজনে তেল দিয়াছে ট্যাঙ্কিখানি ভরে
পুবাল হাওয়ায় ভেসে ভেসে চলছি অচীনপুরে (২)
পিছন পানে কি রহিল না দেখি তাকায়
মহাজনের নাও চড়িয়া কোন সুদুরে যাই।।
মহাজনে বইসা আছে অচীনপুরের ঘাটে
ভবের সওদা নিয়া তবে যাইতে হবে বাটে (২)
কিবা তবে সওদাখানি, সঠিক চেনা চাই
মহাজনের নাও চড়িয়া কোন সুদুরে যাই।।
তেল ফুরাবে যেদিন নাওয়ের বন্ধ হবে চলা
সাঙ্গ হবে ভবনদীর উজান ভাটির খেলা (২)
‘অনন্ত’ কয় পুবাল বায়ে-
সঠিক বৈঠা ধরা দায়
মহাজনের নাও চড়িয়া কোন সুদুরে যাই।।
-----------------------
#গীতিকাব্য#৪৯ (আধ্যাতিক গান)
(#অনন্ত আকতার ১০০২২০১৭২২৩৪-খুলনা)




যাচ্ছে ছেড়ে মা আমাদের
যাচ্ছে ছেড়ে ঘর
সপ্তা খানেক থেকেই বোরিং
ঢাকার এ শহর।
মা-বাবাকে কাছে পাবার
সুযোগ বড় কম
যে দুটো দিন থাকে তাহা
স্বর্গের ও সমান।
চলছে গাড়ি সরছে বাড়ি
বাড়ছে ব্যবধান
গুগল ম্যাপে সেট করেছি
মায়ের অবস্থান।
গর্তবাসী মা আর বাবা
মাটি তাদের সুখ
আমরা হাসি নগর বুকে
লুকিয়ে অসুখ।
এই নগরে থাকবে না মা
যাচ্ছে ফিরে বাড়ি
যেই বাড়িতে পোতা আছে
তোমার-আমার নাড়ী।
কষ্ট বুকে ধূসর চোখে
দেখি গুগল সেবা
পৌছাবে মা ছোট্ট গাঁয়ে
সবুজ মনোলোভা।
মা-মাটিতে ফিরতে হবে
তুমি আমি যত
আকাশ চূড়োই উঠলে যেন
থাকে মাথা নত।
সবাই মিলে সেই মাটিরে
শ্রদ্ধাভরে স্মরি
খোদাতা'লা সহায় থেকো
এই মিনতি করি।
..
অনন্তআকতার
১৮০৩২০২৩১১৩০উত্তরা



চামড়া পাঠাবে বৈদেশে তাই
বাকের করিলো ঋণ
ব্যাংক দেখিলো! ডলার আসিবে
বদলে যাইবে দিন।
দেশের টাকায় চামড়া কিনিয়া
ভরিলো জাহাজ কত
দেশ দেখিলো বাহ কি দারুন
রিজার্ভ আসিবে শত।
বিকিকিনি হলো হাজারে হাজার
ডলার জমিলো হাতে
বাকের ভাবিলো কিনি বাড়ি এক
কানাডা বা টরেন্টোতে।
যেই ভাবা সেই কাজ করিলো
কিনিয়া সারিলো বাড়ি
দেশের টাকা ডলার হইয়া
বিদেশে জমালো পাড়ি।
বাকের দেখিলো হিসাব করিয়া
চামড়ার এ ব্যবসায়
দুই দিকে লাভ সমানে সমান
ডলার ও টাকায়।
শোধ করিলোনা ঋণের টাকা
প্রয়োজন নাই তার
ব্যাংক করুকনা দেউলিয়া তারে
হাজারে হাজার বার।
বেগম পাড়ায় থাকিলে তাহার
টিকিটি পাইবে কেউ?
মরুকগে দেশ রিজার্ভ খরায়
কুকুরে করুক ঘেউ।
...
অনন্তআকতার
২৬০৩২০২৩স্বাধীনতা১০৩০উত্তরা




মহাকাল স্রোতে ভাসাবো পানসি
দুঃখ-নদীর ঢেউয়ে,
ভিড়াবো পানসি তৃণমূল ঘাটে
জীবন-সওদা নিয়ে।
রাখালিয়া আর ভাটিয়ালী সুরে
সাজাবো নতুন গান
নতুন সকালে গাইবে পথিক
মুখরিত হবে প্রান।
সমঝোতা ছিঁড়ে সবুজ আসবে
ঝড়কে করে কাবু
মায়ায় ঘেরা বোবা পৃথিবীতে
গড়বো হাজার তাবু।
.
রইবে পথের অনেক বাকী
তবু আশাহত নই
ভালবাসা নায়ে বিশ্বাস বয়ে
সফলতা আনবোই।
%% অভিপ্রায় %%
____________________
-অনন্তআকতার (০২০৪২০১৬২৩১৮)

সবুজ ধানক্ষেত পেছনে রেখে
তোমার অধরে, ঘাসফুল চুম্বন এঁকে
কত কত দিন গেছে-
কি হবে আর মেঠোপথ ভালবেসে
স্মৃতির সাথে জীবনের হিসেব কষে
এবার বৈশাখ এলে সে হিসেব চুকিয়ে দিও
বৈশাখী শুভেচ্ছা নিও।
.
সেই দশের শুরু থেকে সতেরোকে ছুয়ে
হয়তো তোমার কাছে আরো বেশী কম
কৈশরী ঘড়ির কাঁটার বেহিসেবী বাঁকে
সবুজ তৃণগুলো সেও হয়ে গেছে ফিকে।
কি হবে আর মেঠোপথ ভালবেসে
স্মৃতির সাথে জীবনের হিসেব কষে
এবার বৈশাখ এলে সে হিসেব চুকিয়ে দিও
বৈশাখী শুভেচ্ছা নিও।
.
আরে তুমি আছো, আজও
সোদা মাটির গন্ধ ছুয়ে
ভালবেসে রয়ে গেছো সেথা
আমি শুধু ভুলে কি গেছি!
শেকড় রয়েছে গাঁথা যেথা।
কি হবে আর মেঠোপথ ভালবেসে
স্মৃতির সাথে জীবনের হিসেব কষে
এবার বৈশাখ এলে সে হিসেব চুকিয়ে দিও
বৈশাখী শুভেচ্ছা নিও।
-অনন্ত আকতার (২০১৮০৪০৬২৩৩০খুলনা)




প্যারোডি গান
১। মুল গান: তোমার বাড়ির রঙের মেলায় দেখেছিলাম বায়োস্কোপ
পাশের বাড়ির ইটের ঘরে দেখেছিলাম একটি মুখ
মুখটি দেখার নেশা আমায় ছাড়েনা।
বয়স তাহার অল্প বলে আমি কিছু ভাবছি না
তবু কেন ভাবনা আমায় ছাড়ে না
তবু কেন মন যে আমার মানে না।


কলেতে থাক পানির ধারা সেই ধারাতে আছে সুখ
চাপতে চাপতে বারেক যদি পাই দেখা সেই তোমার মুখ
অমন মুখের দেখা ছাড়া বাচিঁ না
তবু কেন ভাবনা আমায় ছাড়ে না
তবু কেন মন যে আমার মানে না।


হঠাৎ করে কারো নজর পড়ে যদি কোন দিন
মাথায় আমার বজ্র পড়ে, বাচঁব নাতো একটি দিন
সেদিন যেন কোনদিনও আসে না।
তবু কেন ভাবনা আমায় ছাড়ে না
তবু কেন মন যে আমার মানে না।


১। মুল গান:এই কুলে আমি আর ঐ কুলে তুমি
 এই কলে আমি আর ঐ কলে তুমি
মাঝখানে ইটবেড়া বাঁধা হয়ে রয়
তবুও মাঝে মাঝে দিই গলা ঝাড়া
দুটি পাশে দুটি কলে নীর যেন বয়
মাঝখানে...


বোরখা পরে তুমি ওরে 
খুলেছিলে মুখটারে
তাই আমি বসে থাকি গেটের গোড়া্য়
মাঝখানে...


কাছে আছি তবু কথা নয় বিনিময় 
জানিনাতো কি ভুলে এমন হয়
শুনি আমি কান খুলে
মেহেদি গাছের তলে
তুমি যদি আস ওগো গাছের ছায়ায়
মাঝখানে...

যমুনা পারের মেয়ে

যমুনা পারের মেয়ে তুমি
'সনি' তোমার নাম
জোয়ার-ভাটার টানে তুমি 
হারাও অবিরাম 
যখন জোয়ার বয়
চাঁদটি জেগে রয়
আকাশ মাটি এক হয়ে যে 
মনের কথা কয়।


যখন ভাটির টানে 
মাঝির সারি গানে
হারাও তুমি অন্য কোথাও 
ব্যাথা জাগে প্রানে।
যমুনা কন্যা 'সনি'
হও যদি অভিমানি
জোয়ার-ভাটায় ধরব আমি
লাগাম খানি টানি। 

ঝরাফুল
(১)
ঝরাফুল ঝরে যায়
তারপরে চলে যায় 
আপন ঠিকানায়


শুধু মনে রয়
স্মৃতির পাতায়


আর কিছু নয়
ঝরাফুল হতে চাই। 


(২)
 কেউ মনে রাখিবেনা তারে
ঝরে যাবে যেইদিন পথেরও ধারে
অনেক যত্নে ছিল যে একদিন
কত আদরে, কত সোহাগে প্রতিদিন
জল দিত, ঘ্রান নিত সকলে
ঝরিবে সে আজ পথেরও ধারে।


আকাশে জ্বলিবে তারা
নদীতে ঢেউয়ের ধারা
গগনে উড়িবে পাখি
চিরন্তন নিয়ম রাখি,
তবু মনে পড়িবেনা তারে
যে ছিল একদিন হৃদয় জুড়ে।
 

একটি অদৃশ্য হাত

একটি অদৃশ্য হাত
আমাকে রক্ষা করে সকল অনিষ্ট থেকে
একটি অদৃশ্য হাত
ইশারায় থেমে যায় আমি
যেতে পরিনা আমি ঐখানে
যেখানে নিষিদ্ধ সুখ আছে।
আমাকে বাঁধা দেয়
একটি অদৃশ্য নিষ্পাপ হাত। 
মাঝে মাঝে অনুভব করতে চাই মন
নিষিদ্ধ রাত্রির লীলাখেলা
ভুলে যেতে চাই আমি অনেক কিছু
কিন্তু তারপর:
সেই হাত
আমার দু'গালে কষে চড় মারে
আমি স্তব্ধ হয়ে যায়,
সেই চড়ের আঘাতে আমি নিষ্পাপ হয়ে যায় প্রতিনিয়ত
উপভোগ করতে পারিনা অনেক কিছু
তবুও নিষ্পাপ হতে চাই আমি
অদৃশ্য হাতের চড় শাসন করুক আমায় 
অনন্তকাল ধরে।
 



‡mvbvjx †iv‡`i †Luv‡R


GK  wPj‡Z   †iv‡`i  wf‡o
GKw`b  fvjevmv wewµ  Ki‡Z G‡mwQjvg
‡Zvgv‡`i gv‡S|

‡mw`b  kx‡Zi mKv‡j,
‡mvbvjx  †iv‡`i wK  `vg ZLb,
ZvB fvjevmv wewµ K‡i wKb‡Z †P‡qwQjvg
GK wPj‡Z ‡iv`|

‡Zvgv‡`i †iv` KZ `vgx ?
Avi KZ fvjevmv wewµ  Ki‡j
†Zvgv‡`i †iv` Avgvi w`‡e ?
fvjevmvi †_‡K †mvbvjx †iv`
Avgvi Kv‡Q wcÖq ZvB,
e‡m AvwQ cªZx¶vq|

Avgvi Av‡Q fvjevmv Avi
&Zvgv‡`i Av‡Q †mvbvjx †iv`
wewbgq  K‡i †`Lbv GKwU  evi
hw` cvIqv hvq|
fvjevmvøZ †mvbvjx w`b |





মুঠোফোনের কাব্য


(১)
মুঠোফোনের এই প্রান্ত ধরে 
বসে আছি আমি হৃদয়ের তীরে
বন্ধুর অপেক্ষায়।
হাওয়ায় হাওয়ায় ভেসে
যে বন্ধু অনিয়মিত আসে
তারই প্রতিক্ষায়।


(২)
সুরালো কন্ঠ সুমধুর সুর
ভুলে যায় আমি, সে-যে কতদুর
আমার জন্য যে গান গেয়ে যায়
কিভাবে তারে জানাব বিদায়।


(৩)
সময় বাড়ে টাকা কমে
ব্যস্তনুপাতের সঠিক নিয়মে
নিঃশেষ হয় মুঠোফোনের ক্ষমতা
শেষ হয় না তবুও কথা।


(৪)
কন্ঠে যে তার মধূ ভরা
হইয়ে আমি পাগল পারা
তার কারনে দিবা-নিশি
বোতাম ধরে থাকি বসি।


(৫)
ক্রিং ক্রিং শব্দে যখন বাজে আমার ফোন
মনের ভিতর পুলক জাগে, 
জাগে শিহরণ।
বন্ধু তুমি এসো
প্রতিদিন ভালবেসো
এমনি করেই মুঠোফোন ধরে
প্রতিদিন তুমি এসো।




বাংলা লিংকের মোড়ে


ছোট গাছ-
তুমি অনেক বড় হবে একদিন
প্রতিদিন বিন্দু বিন্দু করে বেড়ে
একদিন বাংলা লিংকের মোড়ে।


টাওয়ারের মত বড় হবে তুমি, আরও বড়
হয়তো তাকেও ছাড়িয়ে যাবে তুমি।
তোমার ছোট্ট সরু কান্ড ছুয়ে দিলাম আমি
আপন করে আজ।
আর হয়তো দেব না
কিন্তু তুমি বড় হবে নিযমিত।


শেকড়ের টানে আমি হয়তো ফিরে যাবো মাটির কোলে
তুমি যেমন আছো তোমার মায়ের কোলে।
আমাকে ভুলে যাবে হয়তো
হয়তো আমিও তোমাকে...
চিরন্তন বাস্তবতা তোমাকে-আমাকে গ্রাস করে প্রতিনিযত
তাই আমরা ভুলে যেতে বাধ্য হই একে অপরকে
তারপর তোমার মত অন্য কাওকে ছুতে যেয়ে মনে পড়বে তোমাকে।


তার আরো পরে-
হয়তো কুড়ি বছর পরে
তোমার টানে, তোমার মাটির টানে, ফেলে আসা স্মৃতির টানে
যদি ফিরে আসি,
তোমাকে দেখব টাওয়ারকে ছাড়িযে গেছো তুমি।
চিনবে কি তখন আমাকে?
আমিতো সেই...
যে তোমাকে ছুয়েছিলাম একদিন 
এই বাংলালিংকের মোড়ে।