Wednesday, September 29, 2010

ভূম্পিকম্পে জীবন বাঁচাবে দরজা

ভূমিকম্পরের সময় জীবন বাঁচাতে টেবিলের নীচে বা দরজার নীচে আশ্রয় নেয়াটাই শ্রেয়। এতে হয়তো জীবনটা বেঁচে যেতে পারে। ভূমিকম্পের সময় জীবন রক্ষা করতে সক্ষম হবে এমনই দরজা তৈরি করেছে ইংল্যান্ডের কিংস্টন ইউনিভার্সিটির ডিজনাইনের এক ছাত্র। খবর গিজম্যাগের।

সংবাদমাধ্যমটির বরাতে জানা গেছে, ভূমিকম্পের ফলে ঘরের ছাদ ভেঙ্গে মাথায় পড়া থেকে দরজার ছোট্টো ডিজাইনটিই রক্ষা করতে পারবে।

কিংস্টন ইউনিভার্সিটির মাস্টার্সের এই ডিজাইনারের নাম ইয়াংহা লি।

উদ্ভাবক ইয়াংহা লি-এর বরাতে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, এই দরজার মাঝামঝি থেকে  আনুভূমিকভাবে ভাঁজও করা যাবে।  এতে দরজার নীচের অংশটি উপরের অংশকে খাড়া করে রাখতে সাহায্য করবে। ভূমিকম্প হলে ভেঙ্গে পড়া টুকরাগুলো উপরদিক এবং পাশের দিক থেকে রক্ষা করবে এটি।

জানা গেছে, দরজার ফ্রেমের মধ্যেই রাখার ব্যবস্থা আছে ছোটো ফ্ল্যাশ লাইট, পানির বোতল এবং মেডিলক্যাল সাপোর্ট । আর এমন একটি দরজার নীচে দুইজন আশ্রয় নিতে পারবে।
জানা গেছে, এই দরজাটি দামেও হবে সাশ্রয়ী।



বিডিনিউজটোয়েন্টিফোরডটকম/মিন্টু/এইচবি/সেপ্টেম্বর ৩০/১০

কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তাই এলিয়েনদের খোঁজ দিতে পারে

জৈব শরীরের এলিয়েন খোঁজ না করে বুদ্ধিমান মেশিন জাতীয় এলিয়েনের খোঁজ করাটাই হবে যুক্তিযুক্ত এমনই তথ্য জানিয়েছেন সেটির গবেষক। এলিয়েনরা যে সময়ে রেডিও বার্তার মাধ্যমে সংকেত পাঠানোর প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে সেই সঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তৈরির সময়টারও বেশি ফারাক নেই। খবর বিবিসি অনলাইনের।
সংবাদমাধ্যমটির বরাতে জানা গেছে, দ্যা রিসার্চ ফর এক্সট্রাটেরিস্ট্রিয়াল ইন্টেলিজেন্স (সেটি) এখনও এলিয়েনদের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য রেডিও বার্তা পাঠায়। তাই সেটির গবেষক, সেত সোস্তাক জানিয়েছেন, এলিয়েনদের জৈবিক জীবনের খোঁজ না করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার খোঁজ করাই যুক্তিযুক্ত।

সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, সেটির সঙ্গে জড়িত অনেক গবেষক যুক্তি দিয়েছেন, এলিয়েনরা বিভিন্ন গঠন এবং রসায়ন মেনে তৈরি হলেও প্রকৃতি জীবন বিষয়ক সমস্যা নিজেই সমাধান করে। আর তাই এলিয়েনরা যেমনই হোক না কেনো, তারা মানুষের মতো হবে এবং তাদের জৈবিক জীবনও আমাদের মতোই হবে। আর এই তত্ত¡ মেনেই সেটির গবেষকরা সারা বিশ্বজুড়ে এলিয়েন খোঁজ করে চলেছেন। তাদের বক্তব্য, এলিয়েনরা অবশ্যই জীবন্ত কোনো প্রাণী।

কিন্তু ড. সোস্তাক জানিয়েছেন, দীর্ঘ সময় ধরে জীবন্ত এলিয়েন এর সন্ধান করা হলেও যেহেতু তাদের সাড়া মেলেনি তাই এখন কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার এলিয়েন খোঁজ করা উচিৎ। কারণ এলিয়েন জগতে হয়তো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কোনো মেশিনের জন্ম হয়েছে।

তিনি আরো জানিয়েছেন, বিবর্তনের ধারায় হয়তো এলিয়েনদের যোগাযোগ পদ্ধতি বের করতে অনেক সময় লেগে যাবে কিন্তু আমরা যেমন রেডিও বার্তা প্রেরণ করছি তেমনি এলিয়েনদের কোনো কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার খোঁজ পাওয়াটাই সহজ হবে।

ওজোন স্তর আর বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না

সম্প্রতি জাতিসংঘের দেয়া এক প্রতিবেদনে জানান;ো হয়েছে মন্ট্রিয়ল প্রটোকলের পর ওজোন স্তর আর বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা সফল হয়েছে। জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক ওজোন স্তর প্রতিরোধ দিবসে ৩০০ গবেষকের দেওয়া এক প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। খবর গিজম্যাগের।

সংবাদমাধ্যমটির বরাতে জানা গেছে, এই প্রতিবেদনে ওজোন স্তর পরিবর্তনে পৃথিবীর জলবায়ুর ওপর মোট প্রভাব বিষয়ে নতুন তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

জানা গেছে, ১৯৮৭ সাল থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক ওজোন স্তর প্রতিরোধ দিবস পালন করা হয় সারা বিশ্ব জুড়ে। মন্ট্রিয়ল প্রটোকল হিসেবে ১৯৮৭ সালে এই দিবস পালন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই চুক্তি অনুসারে ওজোন স্তরের জন্য ক্ষতিকর উপাদান সিএফসি বা ক্লোরোফ্লুরো কার্বন নিঃসরণ ঠেকানোর সিদ্ধান্ত হয়। এই চুক্তিতে সিএফসি গ্যাসকে ওজোন স্তর ধ্বংসের এবং গ্রিনহাউজ প্রভাবের জন্য দায়ী করা হয়।

সংবাদমাধ্যমটির বরাতে জানা গেছে, বর্তমান প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে এখনও মন্ট্রিয়ল প্রটোকল ঠিকমতোই কাজ করছে। কারণ এই চুক্তি সম্পাদনের পর ওজোন স্তরে ক্ষরের পরিমাণ আর বাড়েনি।

সংবাদমাধ্যমটির বরাতে জানা গেছে, ওয়ার্ল্ড মেটেরিওলজিক্যাল অর্গানাইজেশন (ডব্লিওএমও) এবং ইউনাইটেড নেশসনস এনভায়রন্টমেন্ট প্রোগ্রাম (ইউনেপ) প্রকাশিত এই প্রতিবেদনটি ৪ বছর পর গুরুত্বপূর্ণ আপডেট করা হলো। সায়েন্টিফিক অ্যাসেসমেন্ট অফ ওজোন ডেপলেশন ২০১০ নামের এই প্রতিবেদনটি আগামি মন্ট্রিয়াল প্রটোকলের সভায় জানানো হবে। আগামি মন্ট্রিয়ল প্রটোকলের সভা অনুষ্ঠিত হবে উগান্ডার কাম্পালায় ৮ থেকে ১২ নভেম্বর।



বিডিনিউজটোয়েন্টিফোরডটকম/মিন্টু/এইচবি/সেপ্টেম্বর ২১/১০

গ্রিনহাউজ পদ্ধতিতে চাষাবাদ মহাশূন্যে

মহাশূন্যের দীর্ঘ যাত্রাপথে নভোচারীদের জন্য খাবারের বন্দোবস্ত এবার চাষাবাদের মাধ্যমেই করা যাবে। গ্রিনহাউজ পদ্ধতিতে নভোযানেই বা স্পেস স্টেশনেই জন্মানো যাবে লেটুস পাতা, টমেটো, মুলা বা বিভিন্ন সালাদ উপকরণ। খবর এমএসএনবিসি-এর।

সংবাদমাধ্যমটির বরাতে জানা গেছে, মহাশূন্যে চাষাবাদের জন্য প্রয়োজন পড়বে স্পেস গ্রিনহাউজ প্রযুক্তি। আর এমনই একটি প্রযুক্তির প্রটোটাইপ পরীক্ষা করেছে নাসা। যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনায় পরীক্ষা করা এই পদ্ধতিটি ‘ ডেজার্ট আরএটিস’ নামে পরিচিত।

জানা গেছে, কেনেডি স্পেস সেন্টারের গবেষকদল ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনের জন্য এই পদ্ধতি চালু করবে। আর এই ইউনিটটি তৈরি করবে উইসকনসিন ভিত্তিক অরবিটাল টেকনোলজিস কর্পোরেশন।

জানা গেছে, এই পদ্ধতিতে চাষাবাদ করতে যে ইউনিটটি তৈরি হবে সেটি হবে ওজনে হালকা, যথেষ্ট শক্তি সাশ্রয়ী কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণ খরচ খুবই কম। এতে কেবল ১০০ ওয়াট শক্তি ব্যয় হতে পারে।

গবেষকদের বরাতে জানা গেছে, এই পদ্ধতিতে চাষাবাদের জন্য প্রয়োজনীয় আলোর উৎস হবে এলইডি এর লাল, নীল এবং সবুজ আলোর সমন্বয়। আর যে মাধ্যমে এটি জন্মানো হবে তাতেই বীজ এবং সার দেওয়া থাকবে। আর পানির প্রবাহও এই প্রক্রিয়ায় চলতে থাকবে।

সংবাদমাধ্যমটির বরাতে জানা গেছে, মহাশূন্যে চাষাবাদের এই পদ্ধতিটি এখনও প্রক্রিয়াধীন পর্যায়ে আছে। আর এটি বাস্তবে সফল করতে এক দশক সময় লেগে যাবে।



বিডিনিউজটোয়েন্টিফোরডটকম/মিন্টু/সেপ্টেম্বর ১৬/১০

পথই হবে গাড়ির জ্বালানী!

গাড়ির চাকা রাস্তায় গড়ালে যে বিদ্যুত তৈরি হয় তা ব্যবহার করেই চলবে গাড়ি। আর এমনই গাড়ি তৈরি করেছেন জার্মানির গবেষকরা। রাস্তার শক্তিকে কাজে লাগিয়ে যে গাড়িটি চলবে তার নাম দেয়া হয়েছে ‘ই-কুইকি’। খবর গিজম্যাগের।

সংবাদমাধ্যমটির বরাতে জানা গেছে, কার্লসরু ইউনিভার্সিটি অফ অ্যাপ্লাইড সায়েন্স এর গবেষকদল এই গাড়িটি তৈরি করেছেন। এই গাড়িটির ওজন মাত্র ৬০ কেজি। আর গাড়ির নিচের দিকে রাখা আছে একটি রিসিভার। আর রাস্তায় যে বিদ্যুত উৎপন্ন হয় এই রিসিভার দিয়ে সেটিই টেনে নেয়া হবে গাড়ির জন্য । এই বিদ্যুত ব্যবহার করেই চলবে ই-কুইকি।

জানা গেছে, ই-কুইকিতে ব্যবহার করা হয়েছে ২ কিলোওয়াটের একটি মোটর। ৭২০ ফুটের ইনডোর ট্র্যাকে প্রতি ঘন্টায় ৩১ মাইল বেগে ৪০ বার ঘুরতে সফল হয়েছে ই-কুইকি।



বিডিনিউজটোয়েন্টিফোরডটকম/মিন্টু/এইচবি/সেপ্টেম্বর ২০/১০

ফের উইন্ডোজ ফোন ৭-এর গুজব অনলাইনে

মাইক্রোসফটের তৈরি উইন্ডোজ ফোন ৭ বাজারে ২১ অক্টোবর আসতে পারে বলে বিভিন্ন টেকি সাইট জানাচ্ছে। এই তারিখে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, স্পেন, জার্মানি এবং ইতালিতে মাইক্রোসফটের উইন্ডোজ ফোন ৭ বাজারে ছাড়া হবে বলে গুজব রয়েছে। খবর এনগ্যাজেট-এর।

সংবাদমাধ্যমটির বরাতে জানা গেছে, জোর গুজব রয়েছে ১১ অক্টোবর নিউ ইয়র্ক সিটিতে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে এ বিষয়ক ঘোষণা দিতে পারে মাইক্রোসফট।

এদিকে, এতোসব গুজবের জবাবে মাইক্রোসফট বিশেষজ্ঞ পল থ্রুট জানিয়েছেন, ১১ তারিখে অনুষ্ঠান থাকলেও সেটি উইন্ডোজ ফোন ৭ এর জন্য কোনো অনুষ্ঠান নয়।

সংবাদমাধ্যমটির বরাতে জানা গেছে, উইন্ডোজ ফোন ৭ যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আসতে পারে ৮ নভেম্বর।


বিডিনিউজটোয়েন্টিফোরডটকম/মিন্টু/এইচবি/সেপ্টেম্বর ২৭/১০

ভূপৃষ্ঠের ১৮০০ মাইল নিচে বন্দী ম্যাগমা স্তর


ফ্রান্সের গবেষকরা পৃথিবী খোলসের ঠিক অভ্যন্তরেই উত্তপ্ত গলিত লাভার একটি স্তরের খোঁজ পেয়েছেন। খবর সায়েন্স ডেইলির।

সম্প্রতি ফ্রান্সের গবেষকরা জানিয়েছেন, উত্তপ্ত গলিত লাভার একটি স্তর এখনও পৃথিবীর অভ্যন্তরে আটকা পড়ে আছে। দুটি কেকের মধ্যে জ্যাম যেভাবে বন্দি হয়ে থাকে এই ম্যাগমার স্তরটি সেভাবেই পৃথিবী অভ্যন্তরে আটকে আছে পৃথিবী গঠনের শুরু থেকেই।

গবেষকদের বরাতে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, ভূপৃষ্ঠের ঠিক ১৮০০ মাইল নিচেই এই ম্যাগমা স্তরের অবস্থান। পৃথিবীর খোলসের অভ্যন্তরে গলিত লাভার অবস্থান পৃথিবী গঠনের প্রাথমিক অবস্থা জানিয়ে দেয়।

সংবাদমাধ্যমটির বরাতে জানা গেছে, নতুন এই ম্যাগমার আবিষ্কারের ফলে পৃথিবী একদিন ম্যাগমা সমুদ্র্রে ডুবে ছিলো সেই তত্ত্বই প্রমাণিত হয়। আর সেই ম্যাগমার কিছু অংশ এখনও পৃথিবী অভ্যস্তরেই রয়ে গেছে।

গবেষকরা জানিয়েছেন, পৃথিবী গঠনের কিছু মডেল থেকে দেখা গেছে পৃথিবীর গঠন শক্ত হয়ে যাবার ফলে গলিত কিছু পাথর পৃথিবীর ম্যান্টলের নিচে ম্যান্টেল কোর বাউন্ডারিতে আটকে গেছে। এই স্তরের খনিজ পদার্থগুলো প্রচণ্ড তাপ ও চাপে আটকে আছে।

বিডিনিউজটোয়েন্টিফোরডটকম/মিন্টু/এইচবি/সেপ্টেম্বর ২৭/১০

অতিরিক্ত একদিন পেটেই ডিম রাখতে পারে কোকিল


সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের গবেষকরা জানিয়েছেন, কোকিলের ডিম পাবার সময় ঘনিয়ে এলেও অতিরিক্ত একদিন ডিম পেটের মধ্যে ধরে রাখার ক্ষমতা আছে। আর অতিরিক্ত একদিন মায়ের পেটে থাকার কারণেই তাড়াতাড়িই ডিম ফুটে বেরিয়ে পড়ে কোকিল ছানারা। ডিম ধরে রাখতে পারার কারণেই সুবিধেমতো চুপিসারে অন্যের বাসায় ডিম পাড়ার কাজটি করে ফেলে মা কোকিল। খবর বিবিসি অনলাইনের।

গবেষকদের বরাতে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, ইন্টারনাল ইনকিউবেশনের ফলে জন্ম নেয়া কোকিল ছানারা অন্যের বাসায় বড় হয় এবং অন্যের বাসায় বড় হওয়া কোকিল ছানাগুলো বাসার অন্যান্য ছানাগুলোকে সরিয়ে নিজেই খাবার খেতে পারে।

ইউনিভার্সিটি অফ শেফিল্ড-এর গবেষক টিম বার্কহেড জানিয়েছেন, কোকিল বা অন্য পাখিগুলো ডিম পাড়ার সময় ঘনিয়ে এলেও ডিম না পেড়ে ধরে রাখতে পারে এবং সুযোগ অনুসারে অন্যের বাসায় চুরি করে ডিম পাড়ে।

গবেষণার ফল প্রকাশিত হয়েছে রয়্যাল সোসাইটি প্রসিডিংস বি সাময়িকীতে।

গবেষকরা জানিয়েছেন, কোকিলকে ব্রুড প্যারাসাইট বলা হয়। ব্রুড প্যারাসাইট সেই প্রজাতির পাখি বা পতঙ্গ প্রজাতির বেলায় ব্যবহার করা হয় যারা সন্তান বড় করার দায়িত্ব পালন করেনা। এই ব্রুড প্যারাসাইটগুলো অন্যের বাসায় ডিম পাড়ে এবং নিজের ডিম থেকে বাচ্চা ফোটাতে বাসায় থাকা অন্য ডিম নিচে ফেলে দেয়।

আত্মহত্যার চিরকুট ১৯০৫ পৃষ্ঠা

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির বাসিন্দা মিশেল হেইসম্যান ১৮ সেপ্টেম্বর নিজের পিস্তলের গুলিতে আত্মহত্যা করেন। আত্মহত্যার কারণ জানিয়ে তিনি লিখে রেখে গেছেন এক হাজার ৯০৫ পৃষ্ঠার বিশাল একটি বিবৃতি। পাঁচ বছর ধরে তিনি এই বিবৃতি লিখেছেন। ই-মেইলের মাধ্যমে পরিবারের সদস্য এবং পরিচিত প্রায় ৪০০ মানুষ তাঁর এই বিবৃতি পেয়েছে।
বিবৃতিতে হেইসম্যান জানিয়েছেন, জীবনকে তিনি একটি দার্শনিক অভিযাত্রার অংশ হিসেবেই নিয়েছিলেন। তাঁর ভাষায় এটি ‘নাস্তিবাদের একটি নিরীক্ষা’।
প্রায় দুই হাজার পৃষ্ঠার এই বিবৃতিতে পাদটীকা আছে এক হাজার ৪৩৩টি। ২০ পৃষ্ঠাজুড়ে আছে গ্রন্থতালিকা। ঈশ্বরের প্রসঙ্গ এসেছে এক হাজার ৭০০ বার। আরও ২০০ বার বলেছেন জার্মান দার্শনিক ফ্রেডারিখ নিৎসের কথা।
হেইসম্যান লিখেছেন, ‘প্রতিটি কথা, চিন্তা এবং অনুভূতি শেষ পর্যন্ত এক জায়গায় এসে ঠেকে তা হলো, জীবন অর্থহীন। প্রতিটি মোহ এবং কল্পবিশ্বাসের মূল খুঁজে বের করাই নাস্তিবাদের নিরীক্ষা।’
হেইসম্যান লিখেছেন, ‘জীবন যদি অর্থহীনই হয় এবং বিভিন্ন মৌলিক বিশ্বাসের মধ্যে কোনো যৌক্তিক ভিত্তিই না থাকে, তাহলে সব পথই এক এবং তখন বাঁচা-মরার মধ্যে কোনো তফাত থাকে না।’
বিবৃতিতে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট টমাস জেফারসন এবং বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের উদ্ধৃতিও টেনেছেন হেইসম্যান। পিটিআই।

Sunday, September 26, 2010

পাথরকুচি পাতা থেকে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করছে জবির এক শিক্ষক

ভাঙাচোরা একটি চেয়ারের ওপর একটি ছোট বৈদ্যুতিক পাখা ঘুরছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। লক্ষ করলে মনে হবে, পাখায় বিদ্যুত্সংযোগ নেই। আছে শুধু একটি প্লাস্টিকের মগের মধ্যে সবুজ রঙের তরল পদার্থ। সেই তরলের মধ্যে দুটি ধাতব পাত ডোবানো। পৃথক তার সেই পাত দুটিকে যুক্ত করেছে পাখার সঙ্গে। এতেই পাখা ঘুরছে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের একটি পরীক্ষাগারের সামনে গিয়ে এমন দৃশ্য চোখে পড়ল। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, সপ্তাহখানেক ধরে এই পাখাটি অবিরাম ঘুরছে। মগের ওই তরল পদার্থ আসলে পাথরকুচি পাতার রস। ওই রসই বিদ্যুতের মূল উৎস।
নতুন এই প্রযুক্তির উদ্ভাবক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক মো. কামরুল আলম খান। তিনি বললেন, পাথরকুচির পাতা থেকে উত্পাদিত বিদ্যুৎ দিয়ে বাতি জ্বালানো, পাখা ঘোরানো এমনকি টেলিভিশন চালানোও সম্ভব। এতে খরচও অনেক কম।
শুরুর গল্প: কামরুল আলম বলেন, দেশের প্রাকৃতিক সম্পদের স্বল্পতা, বিদ্যুৎ সমস্যা—এসব নিয়ে ভাববার সময় মনে হয়েছে উদ্ভাবন ছাড়া সংকট মোকাবিলা সম্ভব হবে না। নবায়নযোগ্য শক্তির কথাও ভেবেছেন তিনি। এসব ভাবতে ভাবতেই পাথরকুচি নিয়ে কাজ শুরু করেন।
২০০৮ সালের শুরুর দিকের কথা। এক ছাত্রকে দিয়ে মুন্সিগঞ্জ থেকে এক কেজি পাথরকুচি পাতা নিয়ে আসেন তিনি। তারপর শুরু হয় গবেষণা। কয়েক মাসের মধ্যেই আশানুরূপ ফল পেলেন তিনি। প্রথমে ১২ ভোল্টের ক্ষুদ্র আকৃতির বাতি জ্বালিয়ে তিনি আশার আলো দেখতে পান। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে শিল্প মন্ত্রণালয়ে এই উদ্ভাবনের মেধাস্বত্ব নিবন্ধন (প্যাটেন্ট) করেন তিনি। এরপর গত দেড় বছরের গবেষণার পর বৈদ্যুতিক বাতি, পাখা, সাদাকালো টেলিভিশন চালাচ্ছেন তিনি।
গবেষণার টেবিলে পাথরকুচি: বাংলাদেশে পাথরকুচি পাতা নামে পরিচিত হলেও (বৈজ্ঞানিক নাম Bryophillum বা ব্রায়োফাইলাম) বিভিন্ন দেশে এটি ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত। ভেষজগুণের কারণে অনেকে পাথরকুচিকে ‘মিরাকল লিফ’ বলেন। পেটের ব্যথা কমাতে দেশের অনেক অঞ্চলে এই পাতার ব্যবহার আছে।
পাথরকুচির পাতায় কী আছে, যা বিদ্যুৎ উৎপাদন করে? এমন প্রশ্নের উত্তরে কামরুল আলম বলেন, পদার্থের মধ্যে এসিডিক (অম্লীয়) হাইড্রোজেন আয়ন ও ক্ষারীয় হাইড্রোক্সিল আয়ন থাকে। এসিডিক (অম্লীয়) হাইড্রোজেন আয়ন বেশি পরিমাণে থাকলে সেই পদার্থ দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। তিনি বলেন, পাথরকুচি পাতায় হাইড্রোজেন আয়নের পরিমাণ প্রায় ৭৮ শতাংশ, যা বিদ্যুৎ উৎপাদনে খুবই সহায়ক।
কামরুল আলম আরও কয়েকটি গাছের পাতা নিয়ে গবেষণা করেছেন। তিনি দেখেছেন তেঁতুল, লেবু, আলু, আম, কাঁঠাল, টমেটো, বটের পাতায় ক্ষারীয় আয়নের পরিমাণ বেশি বলে বিদ্যুৎ উত্পাদন সম্ভব নয়।
যেভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়: পাথরকুচি পাতা দিয়ে ব্লেন্ডার মেশিনের মাধ্যমে শরবতের মতো দ্রবণ তৈরি করা হয়। দ্রবণে পাথরকুচি পাতা ও পানির অনুপাত হতে হবে ৮:১। ওই দ্রবণ প্লাস্টিকের পাত্রে রাখা হয়। এরপর একটি তামা ও একটি দস্তার পাত দ্রবণে ডুবিয়ে দেওয়া হয়। দ্রবণের সংস্পর্শে আসামাত্রই রাসায়নিক বিক্রিয়ার কারণে তামার পাতে ধনাত্মক ও দস্তার পাতে ঋণাত্মক বিভবের (পটেনশিয়াল) সৃষ্টি হয়। বিপরীতমুখী এই বিভবের দ্বারাই দুই পাতের মধ্যে বিভব পার্থক্য হয়। এতেই বিদ্যুত্প্রবাহ সৃষ্টি হয়। বেশি বিদ্যুৎ পেতে হলে একাধিক তামা ও দস্তার পাত ঘন করে সমান্তরালভাবে বসাতে হবে।
পাথরকুচি পাতা চাষ: পাথরকুচি পাতার চাষ বেশ সহজ। পাথরকুচির শুধু পাতা মাটিতে ফেলে রাখলেই সেখান থেকে গাছ জন্মায়। পতিত জমি, বাড়ির ছাদে, উঠানে, টবে, যেকোনো জায়গায় এই পাতার চাষ সম্ভব।
কামরুল আলম বলেন, দেশের পতিত জমিতে সহজেই প্রচুর পাথরকুচি পাতার চাষ সম্ভব। আর চাষের এক মাসের মধ্যেই পাতা কাজে লাগানো যায়। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ তৈরি করতে এক মাসের মধ্যে নতুন করে পাথরকুচির দ্রবণের প্রয়োজন পড়ে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ আলোকিত করতে পরিকল্পনা করেছেন কামরুল আলম। এর জন্য ৫০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ দরকার হবে। আর ওই পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে লাগবে প্রায় ৪০০ কেজি পাতা। ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন এলাকার কৃষকেরা মুঠোফোনে তাঁকে বলেছেন, তাঁরা পাতা সরবরাহ করবেন।
খরচ হবে কম: কামরুল আলম বলেন, পাথরকুচি পাতা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনে খরচ হবে কম। প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের খরচ পড়বে এক টাকার কম। এটা সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন খরচের তিন ভাগের এক ভাগ। তিনি দাবি করেন, ৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করতে অবকাঠামো খাতে ব্যয় হবে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা।
সম্ভাবনাময় প্রযুক্তি: এই প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে বহনযোগ্য বৈদ্যুতিক পাখা তৈরি করেছেন কামরুল আলম। ১২ ভোল্টের এই বৈদ্যুতিক পাখা টানা এক মাস হাওয়া দিতে পারে। এক মাস পর শুধু দ্রবণ পাল্টে দিলেই পাখা আবার ঘুরবে।
কামরুল আলম বলেন, দেশের প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষ বিদ্যুত্সংযোগের আওতায় এলেও লোডশেডিংয়ে তারা বিপর্যস্ত। তিনি বলেন, পল্লি অঞ্চলে তাঁর প্রযুক্তি সহজেই ব্যবহার করা সম্ভব হবে। প্রতিটি পরিবার নিজেদের প্রয়োজনের বিদ্যুৎ নিজেরা উৎপাদন করতে পারবে।
বিদ্যুৎ উৎপাদনের পর দ্রবণের বর্জ্য অন্য কাজেও ব্যবহার করা যাবে। পাথরকুচির বর্জ্য কোনো পাত্রে বদ্ধ অবস্থায় রাখলে তা থেকে মিথেন গ্যাস পাওয়া যায়। এই গ্যাস দিয়ে রান্না করা সম্ভব। গ্যাস উৎপাদনের পর বর্জ্য আবার জৈব সার হিসেবেও ব্যবহার করা যাবে।
চাই আরও গবেষণা: কামরুল আলম খান নিজের অর্থে এবং পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ থেকে সহায়তা নিয়ে এ পর্যন্ত গবেষণা চালিয়ে এসেছেন। কিন্তু প্রয়োজন অনুযায়ী গবেষণার জন্য অর্থ ব্যয় করতে পারছেন না। পাথরকুচির দ্রবণ রাখার জন্য তাঁর দরকার বড় বড় পাত্র। বর্তমানে তিনি ব্যাটারির খোলস ব্যবহার করছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, বিশ্বব্যাংক ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে ‘হেকেপ প্রকল্প’ নামে একটি প্রকল্প আছে। এই প্রকল্প গবেষণায় সহায়তা দেয়। কামরুল আলম পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে ৫০ কিলোওয়াট বিদ্যুেকন্দ্র স্থাপন ও গবেষণার জন্য সেখানে এক কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রস্তাব দিয়েছেন।
কামরুল আলম বলেন, পাথরকুচি পাতা থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ ব্যবহারের জন্য আরও একটি গবেষণা চলছে। তিনি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মেসবাহউদ্দিন আহমেদের তত্ত্বাবধানে গবেষণাটি চলছে।
কামরুল আলম খান বলেন, ‘প্রথমে আমি পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ ও পরবর্তী সময়ে পুরো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে এই বিদ্যুৎ দিয়ে আলোকিত করতে চাই।’ এ ক্ষেত্রে সফল হলে তিনি দ্বীপাঞ্চলের মানুষের কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নেবেন। এ জন্য ‘পাথরকুচি পাতাপল্লি’ স্থাপন করার পরিকল্পনা তাঁর আছে। তিনি বলেন, এ জন্য সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসতে হবে।