ঘুড়ি ওড়ানোর মধ্যে রয়েছে এক অন্যরকম আনন্দ। পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই ঘুড়ি ওড়ানো একটি জনপ্রিয় খেলা। তবে ঘুড়ি শুধুই যে ছোটরা ওড়ায় তা কিন্তু নয়, বড়রাও ঘুড়ি উড়িয়ে থাকেন।
ঘুড়ির আবিষ্কার হয়েছিল কোথায়? কে এই সুন্দর খেলার বস্তুটি আবিষ্কার করেছিলেন? তা সঠিকভাবে জানা যায় না। তবে শোনা যায় ৪০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে গ্রিসের ট্যারাস্টাস শহরের আর্কিটাস নামে এক ভদ্রলোক প্রথম ঘুড়ি তৈরি করেছিলেন। আবার কেউ কেউ মনে করেন ২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে হান সিন নামে চীন দেশের এক সেনাপতিই প্রথম ঘুড়ি তৈরি করেন। আগে সিল্ক কাপড় দিয়ে ঘুড়ি তৈরি হতো। কাগজ আবিষ্কারের পর কাগজের ঘুড়ি তৈরি শুরু হয়।
ইউরোপ বা আমেরিকায় ঘুড়ি ওড়ানোর রেওয়াজ থাকলেও চীন, জাপান, কোরিয়া, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়ার মতো পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতেই এই খেলার জনপ্রিয়তা বেশি। যদিও আকাশ পরিষ্কার থাকলে ও অনুকূল বাতাস পেলেই ঘুড়ি ওড়ানো যায়, তবুও পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই একটি বিশেষ দিনকেই ঘুড়ি দিবস হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে। এদিন সবচেয়ে বেশি ঘুড়ি আকাশে উড়তে দেখা যায়। সবাই এই বিশেষ দিনটির কথা ভেবেই যেন নিজেদের প্রস্তুত করতে থাকেন।
চীন দেশে ঘুড়ি দিবসের দিন সব বয়সের নারী ও পুরুষ ঘুড়ি উড়িয়ে থাকেন। বিচিত্র বর্ণের, বিচিত্র আকারের অসংখ্য ঘুড়ি সারা আকাশ রাঙিয়ে তোলে। ওদেশের ঘুড়িগুলোর রং ও আকার আমাদের দেশের ঘুড়ির চেয়ে অনেক বেশি বৈচিত্র্যপূর্ণ। রংবেরংয়ের সুন্দর মাছ, প্রজাপতি, ড্রাগন, পাখি, মানুষ, পরী, জাহাজ ইত্যাদি প্রায় তিনশ রকমের ঘুড়ি আকাশে উড়তে দেখা যায়। আর সবচেয়ে মজার ঘুড়ি হলো লণ্ঠন ঘুড়ি। রাতেরবেলায় এই ঘুড়ির মধ্যে লণ্ঠন বসিয়ে ওড়ানো হয়। আমাদের দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এরকমই বিভিন্ন ঘুড়ি দিবসে ঘুড়ি ওড়ানো হয়। প্রতিবছর পুরান ঢাকায় সাকরাইন উৎসবে ঘুড়ি ওড়ানো অন্যতম একটি অনুষঙ্গ। বিচ্ছিন্নভাবে সারা দেশে নিয়মিতই চলে ঘুড়ির উৎসব। ঢাকায় কিছু সংস্কৃতিসেবী প্রতিষ্ঠান কয়েক বছর ধরে ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন করে আসছে।
আমাদের দেশের ঘুড়ি এবং ভারতীয় ঘুড়ির মধ্যে খানিকটা মিল রয়েছে। তবে অনেক ক্ষেত্রে ভারতের একাধিক প্রদেশে অভিনব রকমের ঘুড়ির দেখা মেলে। এসব ঘুড়ির সঙ্গে মালয়েশিয়ার ঘুড়ির কিছু মিল দেখতে পাওয়া যায়। পশ্চিমবঙ্গে দুইটি কাঠি দিয়ে তৈরি বর্গাকৃতির ঘুড়ি যার আকারগত কোনো বৈচিত্র্য লক্ষ করা যায় না। কেবল নানা রংয়ের কাগজ দিয়ে বিভিন্ন ডিজাইনে তৈরি করা হয়ে থাকে। ডিজাইন মতো তাদের বিভিন্ন নামে ডাকা হয়, যেমন চাঁদিয়াল, ঢুপিয়াল, ঘয়লা, চৌরঙ্গি ইত্যাদি। ভারতবর্ষের অন্যত্র বিভিন্ন দেশের নেতা বা সিনেমার নায়কদের ছবি ঘুড়িতে লাগিয়ে ওড়ানো হয়ে থাকে।
উপমহাদেশে মুসলিম শাসনামলে বিভিন্ন সময়ে নানা রকমের ঘুড়ি দেখা গেছে। যেমন কানকাওয়া, চংগ, তুলকল, পতংগ, গুড্ডি প্রভৃতি। এসব ঘুড়ি তৈরি করা ছিল যেমন শ্রমসাধ্য তেমনি খরচ সাপেক্ষ। দিলি্লর রাজা শাহ আলমের আমল থেকেই ঘুড়ি ওড়ানোটা ভারতবর্ষে খেলা হিসেবে মনে করা হয়। নবাবী আমল ছিল পেশাদার ঘুড়ি উড়িয়েদের সুবর্ণ যুগ। তখন ঘুড়ি ওড়ানোর ওপর বাজি ধরা হতো যা হতো উড়িয়েদের প্রাপ্য।
ঘুড়ির প্যাঁচ বা কাইট ফাইটিং প্রায় সব দেশেই খেলা হয়ে থাকে। তবে এ ব্যাপারে সবচেয়ে মাতামাতি হয় থাইল্যান্ডে। ওখানে ঘুড়ির লীগ প্রতিযোগিতা হয়। শীতকালে এ ধরনের প্রতিযোগিতা দেখা যায়।
ঘুড়ি ওড়ে কিভাবে? ঘুড়িতে সুতো দিয়ে মাটি থেকে নিচের দিকে টান দেওয়া হয়। আর ঘুড়ির ওপর উর্ধ্বমুখী কাজ করে বাতাসের আকর্ষণ শক্তি। এই দুটি টান যতক্ষণ সমান থাকে ততক্ষণ ঘুড়ি আকাশে উড়তে পারে। শুধু খেলার সামগ্রী হিসেবে পরিচিত হলেও অনেক সময়ে এই ঘুড়িই বিজ্ঞানের নানা গবেষণায় সাহায্য করেছে। যেমন ১৭৪৯ সালে আলেকজান্ডার উইলসন ঘুড়িতে থার্মোমিটার লাগিয়ে ঊর্ধ্বাকাশের তাপমাত্রা নির্ণয়ের চেষ্টা করেছিলেন। ১৯০১ সালের ১২ ডিসেম্বর ঘুড়ির মধ্যে অ্যান্টেনা লাগিয়ে নিউফাউন্ডল্যান্ডের বৈজ্ঞানিক মার্কনি আকাশের ইলেকট্রোম্যাগনেটিভ ওয়েভ ধরতে সক্ষম হয়েছিলেন। ১৭৫২ সালে বিজ্ঞানী বেঞ্জামিন ফ্র্যাংকলিন আকাশে একটি সিল্কের ঘুড়ি উড়িয়ে তার সাহায্যে কৃত্রিমভাবে প্রস্তুত বিদ্যুৎ ও আকাশের বিদ্যুৎ যে এক তা প্রমাণ করেছিলেন। যুদ্ধের নানা কাজেও ঘুড়ি ব্যবহার করা হয়েছে পৃথিবীর নানাপ্রান্তে।
ঘুড়ির আবিষ্কার হয়েছিল কোথায়? কে এই সুন্দর খেলার বস্তুটি আবিষ্কার করেছিলেন? তা সঠিকভাবে জানা যায় না। তবে শোনা যায় ৪০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে গ্রিসের ট্যারাস্টাস শহরের আর্কিটাস নামে এক ভদ্রলোক প্রথম ঘুড়ি তৈরি করেছিলেন। আবার কেউ কেউ মনে করেন ২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে হান সিন নামে চীন দেশের এক সেনাপতিই প্রথম ঘুড়ি তৈরি করেন। আগে সিল্ক কাপড় দিয়ে ঘুড়ি তৈরি হতো। কাগজ আবিষ্কারের পর কাগজের ঘুড়ি তৈরি শুরু হয়।
ইউরোপ বা আমেরিকায় ঘুড়ি ওড়ানোর রেওয়াজ থাকলেও চীন, জাপান, কোরিয়া, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়ার মতো পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতেই এই খেলার জনপ্রিয়তা বেশি। যদিও আকাশ পরিষ্কার থাকলে ও অনুকূল বাতাস পেলেই ঘুড়ি ওড়ানো যায়, তবুও পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই একটি বিশেষ দিনকেই ঘুড়ি দিবস হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে। এদিন সবচেয়ে বেশি ঘুড়ি আকাশে উড়তে দেখা যায়। সবাই এই বিশেষ দিনটির কথা ভেবেই যেন নিজেদের প্রস্তুত করতে থাকেন।
চীন দেশে ঘুড়ি দিবসের দিন সব বয়সের নারী ও পুরুষ ঘুড়ি উড়িয়ে থাকেন। বিচিত্র বর্ণের, বিচিত্র আকারের অসংখ্য ঘুড়ি সারা আকাশ রাঙিয়ে তোলে। ওদেশের ঘুড়িগুলোর রং ও আকার আমাদের দেশের ঘুড়ির চেয়ে অনেক বেশি বৈচিত্র্যপূর্ণ। রংবেরংয়ের সুন্দর মাছ, প্রজাপতি, ড্রাগন, পাখি, মানুষ, পরী, জাহাজ ইত্যাদি প্রায় তিনশ রকমের ঘুড়ি আকাশে উড়তে দেখা যায়। আর সবচেয়ে মজার ঘুড়ি হলো লণ্ঠন ঘুড়ি। রাতেরবেলায় এই ঘুড়ির মধ্যে লণ্ঠন বসিয়ে ওড়ানো হয়। আমাদের দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এরকমই বিভিন্ন ঘুড়ি দিবসে ঘুড়ি ওড়ানো হয়। প্রতিবছর পুরান ঢাকায় সাকরাইন উৎসবে ঘুড়ি ওড়ানো অন্যতম একটি অনুষঙ্গ। বিচ্ছিন্নভাবে সারা দেশে নিয়মিতই চলে ঘুড়ির উৎসব। ঢাকায় কিছু সংস্কৃতিসেবী প্রতিষ্ঠান কয়েক বছর ধরে ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন করে আসছে।
আমাদের দেশের ঘুড়ি এবং ভারতীয় ঘুড়ির মধ্যে খানিকটা মিল রয়েছে। তবে অনেক ক্ষেত্রে ভারতের একাধিক প্রদেশে অভিনব রকমের ঘুড়ির দেখা মেলে। এসব ঘুড়ির সঙ্গে মালয়েশিয়ার ঘুড়ির কিছু মিল দেখতে পাওয়া যায়। পশ্চিমবঙ্গে দুইটি কাঠি দিয়ে তৈরি বর্গাকৃতির ঘুড়ি যার আকারগত কোনো বৈচিত্র্য লক্ষ করা যায় না। কেবল নানা রংয়ের কাগজ দিয়ে বিভিন্ন ডিজাইনে তৈরি করা হয়ে থাকে। ডিজাইন মতো তাদের বিভিন্ন নামে ডাকা হয়, যেমন চাঁদিয়াল, ঢুপিয়াল, ঘয়লা, চৌরঙ্গি ইত্যাদি। ভারতবর্ষের অন্যত্র বিভিন্ন দেশের নেতা বা সিনেমার নায়কদের ছবি ঘুড়িতে লাগিয়ে ওড়ানো হয়ে থাকে।
উপমহাদেশে মুসলিম শাসনামলে বিভিন্ন সময়ে নানা রকমের ঘুড়ি দেখা গেছে। যেমন কানকাওয়া, চংগ, তুলকল, পতংগ, গুড্ডি প্রভৃতি। এসব ঘুড়ি তৈরি করা ছিল যেমন শ্রমসাধ্য তেমনি খরচ সাপেক্ষ। দিলি্লর রাজা শাহ আলমের আমল থেকেই ঘুড়ি ওড়ানোটা ভারতবর্ষে খেলা হিসেবে মনে করা হয়। নবাবী আমল ছিল পেশাদার ঘুড়ি উড়িয়েদের সুবর্ণ যুগ। তখন ঘুড়ি ওড়ানোর ওপর বাজি ধরা হতো যা হতো উড়িয়েদের প্রাপ্য।
ঘুড়ির প্যাঁচ বা কাইট ফাইটিং প্রায় সব দেশেই খেলা হয়ে থাকে। তবে এ ব্যাপারে সবচেয়ে মাতামাতি হয় থাইল্যান্ডে। ওখানে ঘুড়ির লীগ প্রতিযোগিতা হয়। শীতকালে এ ধরনের প্রতিযোগিতা দেখা যায়।
ঘুড়ি ওড়ে কিভাবে? ঘুড়িতে সুতো দিয়ে মাটি থেকে নিচের দিকে টান দেওয়া হয়। আর ঘুড়ির ওপর উর্ধ্বমুখী কাজ করে বাতাসের আকর্ষণ শক্তি। এই দুটি টান যতক্ষণ সমান থাকে ততক্ষণ ঘুড়ি আকাশে উড়তে পারে। শুধু খেলার সামগ্রী হিসেবে পরিচিত হলেও অনেক সময়ে এই ঘুড়িই বিজ্ঞানের নানা গবেষণায় সাহায্য করেছে। যেমন ১৭৪৯ সালে আলেকজান্ডার উইলসন ঘুড়িতে থার্মোমিটার লাগিয়ে ঊর্ধ্বাকাশের তাপমাত্রা নির্ণয়ের চেষ্টা করেছিলেন। ১৯০১ সালের ১২ ডিসেম্বর ঘুড়ির মধ্যে অ্যান্টেনা লাগিয়ে নিউফাউন্ডল্যান্ডের বৈজ্ঞানিক মার্কনি আকাশের ইলেকট্রোম্যাগনেটিভ ওয়েভ ধরতে সক্ষম হয়েছিলেন। ১৭৫২ সালে বিজ্ঞানী বেঞ্জামিন ফ্র্যাংকলিন আকাশে একটি সিল্কের ঘুড়ি উড়িয়ে তার সাহায্যে কৃত্রিমভাবে প্রস্তুত বিদ্যুৎ ও আকাশের বিদ্যুৎ যে এক তা প্রমাণ করেছিলেন। যুদ্ধের নানা কাজেও ঘুড়ি ব্যবহার করা হয়েছে পৃথিবীর নানাপ্রান্তে।
আমিন রহমান নবাব
মুলসুত্র: http://www.bangladesh-pratidin.com/?view=details&type=gold&data=Football&pub_no=239&cat_id=3&menu_id=16&news_type_id=1&index=0