আমাদের এ সমাজ পুরুষপ্রধান হলেও মায়ের কদরই বেশি। কিছু হলেই বলি মা গো। মা ও সন্তানকে স্নেহে, আদরে, যত্নে, বিপদে আগলে রাখেন। মনে কষ্ট পেলে বলে থাকেন আমি কত কষ্টে পেটে ধরেছি তুই আমাকে কষ্ট দিলি? কিন্তু কিছুক্ষণ পরই কষ্ট ভুলে যান। এই তো মাতৃত্ব। কিন্তু পিতৃত্ব একটি শব্দ বাংলা ভাষায় থাকলেও প্রচলন মাতৃত্বের তুলনায় অনেক কম। মাঝে মাঝে পত্রিকায় দেখি পিতৃত্বের দাবিতে অনশন করেছে, মামলা করছে ইত্যাদি। অর্থাৎ বাবা যেন মায়ের তুলনায় সন্তানের প্রতি কম দায়িত্বশীল। যদিও বিষয়টি মোটেও তা নয়। পুরুষপ্রধান সমাজে পিতাকে বাইরের দায়িত্ব বেশি নিতে হওয়ায় তিনি সন্তানদের কম লালন-পালন করতে পারেন। কিন্তু মাছের বেলায় মনে হয় বিষয়টি আলাদা। মা মাছ বাচ্চা জন্ম দিয়েই খালাস, সুযোগ পেলে দু'একটা ধরেও খায়। অন্য প্রাণীদের মতো সন্তান লালন-পালন করে না। এ কারণেই বোধহয় বাংলা ভাষায় একটা প্রবাদ আছে_ মাছের মায়ের পুত্রশোক। অর্থাৎ লোক দেখানো অভিনয়। অপরদিকে মাছের বাবারা সন্তানদের প্রতি ভীষণ দায়িত্বশীল। তাদের ক্ষেত্রে পিতৃত্বের বোঝা অনেক ভারী।
উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, তেলাপোকা, কেট ফিস মাছের কথা। এ জাতের মাছের মায়েরা একটি নির্দিষ্ট সময় ডিম পাড়ে। সেই সময় বাবা মাছটি মায়ের কাছাকাছি থাকে। মা ডিম পাড়ে আর বাবা দ্রুত একটার পর একটা ডিম মুখে পুরে ফেলে। দৃশ্যটি দেখলে মনে হবে পুরুষ মাছ ডিম খেয়ে ফেলছে। আসলে তা নয়। বাবা মাছ একে একে সব ডিম মুখে পুরে নেয়। তারপর শুরু হয় ডিমে তা দেওয়ার পালা। মুখের ভেতরেই ডিম থেকে বিভিন্ন পর্যায় পাড়ি দিয়ে পোনা মাছ বের হয়। এ পুরো সময়টাতে পুরুষ মাছ অভুক্ত থাকে। আস্তে আস্তে পোনা বড় হতে থাকে, মুখের ভেতর থেকে সুযোগ পেলেই দু'একটা বাইরে আসে। বাবা মাছ খুবই সতর্কতার সঙ্গে দুষ্টু সন্তানকে আবার মুখের ভেতর পুরে নেয়। যখন পোনা আরও বড় হয়ে যায় তখন এদের আর মুখের ভেতর আবদ্ধ করে রাখা যায় না। এরা বাইরের জগৎকে দেখতে ব্যাকুল হয়ে পড়ে। সুযোগ পেলেই দলবেঁধে বেরিয়ে পড়ে। বাবা তখন আর বাধা দেয় না। পোনা বাবার কাছে ঘুর ঘুর করতে থাকে। যখনই কোনো শত্রু দেখে তখন সুবোধ বালকের মতো বাবার মুখের ভেতর ঢুকে পড়ে। আর বাবাও পোনাকে মুখের ভেতর গপ করে পুরে নেয়। কি নিরাপদ আশ্রয়। যতদিন পোনা বড় হয়ে দায়িত্বশীল না হয় ততদিন এ অবস্থা চলতে থাকে।
পাইপ ফিশ-এর ক্ষেত্রে বিষয়টি আরও মজার। প্রজননের সময় বাবা মাছের শরীরের নিচের অংশে দুটো ঢাকনার মতো বস্তু তৈরি হয় এবং ধীরে ধীরে দু'টি একসঙ্গে মিলে একটি থলে তৈরি হয়। প্রজননকালে বাবা মাছ মা মাছকে মুখ দিয়ে পেটে ধাক্কা দিতে থাকে আর অমনি কিছু ডিম মাছের লম্বা প্রজনন নল দিয়ে বেরিয়ে বাবার থলের মধ্যে ঢুকে পড়ে। মাছের তো আর কোনো হাত নেই যে, সে ডিমগুলো হাতে ধরে ধরে থলেতে পুরবে। তাই কয়েকটা ডিম যখনই নলের মুখে আসে তখনই সে নাচের মুদ্রায় দ্রুত সামনে ছুটে আর ডিমগুলো থলের তলদেশে চলে যায়। বারবার এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাবা মাছ সব ডিম তার থলের মধ্যে পুরে নেয়। এবার ডিমগুলোকে তা দেওয়ার পালা। দুই সপ্তাহ পর ডিম পোনা মাছে পরিণত হয়। পিতার পেটের মধ্যে থাকা থলেতে পোনা মাছগুলো কিলবিল করতে থাকে। এক সময় থলে থেকে পোনাগুলো বেরিয়ে আসে আর বাবার কাছে ঘুর ঘুর করতে থাকে। আর বড় কিছু দেখে ভয় পেলে দৌড়ে আবার বাবার নিরাপদ থলেতে আশ্রয় নেয়। বাবাও এর জন্য তৈরি থাকে। মা মাছটিকে ডিম পাড়ার পর আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না। এ ব্যবস্থা দ্বীপ মহাদেশ অস্ট্রেলিয়ার ক্যাঙারুর কথা মনে করিয়ে দেয়। আমরা নিশ্চয়ই জানি বাচ্চা লালন-পালনের জন্য ক্যাঙারুর পেটের অংশেও একটি থলে থাকে। যেখানে মুখ বের করে বাচ্চা-ক্যাঙ্গারু বসে আছে, এমন ছবি আমরা প্রায়ই দেখতে পাই।
মো. আসাদুজ্জামান
উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, তেলাপোকা, কেট ফিস মাছের কথা। এ জাতের মাছের মায়েরা একটি নির্দিষ্ট সময় ডিম পাড়ে। সেই সময় বাবা মাছটি মায়ের কাছাকাছি থাকে। মা ডিম পাড়ে আর বাবা দ্রুত একটার পর একটা ডিম মুখে পুরে ফেলে। দৃশ্যটি দেখলে মনে হবে পুরুষ মাছ ডিম খেয়ে ফেলছে। আসলে তা নয়। বাবা মাছ একে একে সব ডিম মুখে পুরে নেয়। তারপর শুরু হয় ডিমে তা দেওয়ার পালা। মুখের ভেতরেই ডিম থেকে বিভিন্ন পর্যায় পাড়ি দিয়ে পোনা মাছ বের হয়। এ পুরো সময়টাতে পুরুষ মাছ অভুক্ত থাকে। আস্তে আস্তে পোনা বড় হতে থাকে, মুখের ভেতর থেকে সুযোগ পেলেই দু'একটা বাইরে আসে। বাবা মাছ খুবই সতর্কতার সঙ্গে দুষ্টু সন্তানকে আবার মুখের ভেতর পুরে নেয়। যখন পোনা আরও বড় হয়ে যায় তখন এদের আর মুখের ভেতর আবদ্ধ করে রাখা যায় না। এরা বাইরের জগৎকে দেখতে ব্যাকুল হয়ে পড়ে। সুযোগ পেলেই দলবেঁধে বেরিয়ে পড়ে। বাবা তখন আর বাধা দেয় না। পোনা বাবার কাছে ঘুর ঘুর করতে থাকে। যখনই কোনো শত্রু দেখে তখন সুবোধ বালকের মতো বাবার মুখের ভেতর ঢুকে পড়ে। আর বাবাও পোনাকে মুখের ভেতর গপ করে পুরে নেয়। কি নিরাপদ আশ্রয়। যতদিন পোনা বড় হয়ে দায়িত্বশীল না হয় ততদিন এ অবস্থা চলতে থাকে।
পাইপ ফিশ-এর ক্ষেত্রে বিষয়টি আরও মজার। প্রজননের সময় বাবা মাছের শরীরের নিচের অংশে দুটো ঢাকনার মতো বস্তু তৈরি হয় এবং ধীরে ধীরে দু'টি একসঙ্গে মিলে একটি থলে তৈরি হয়। প্রজননকালে বাবা মাছ মা মাছকে মুখ দিয়ে পেটে ধাক্কা দিতে থাকে আর অমনি কিছু ডিম মাছের লম্বা প্রজনন নল দিয়ে বেরিয়ে বাবার থলের মধ্যে ঢুকে পড়ে। মাছের তো আর কোনো হাত নেই যে, সে ডিমগুলো হাতে ধরে ধরে থলেতে পুরবে। তাই কয়েকটা ডিম যখনই নলের মুখে আসে তখনই সে নাচের মুদ্রায় দ্রুত সামনে ছুটে আর ডিমগুলো থলের তলদেশে চলে যায়। বারবার এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাবা মাছ সব ডিম তার থলের মধ্যে পুরে নেয়। এবার ডিমগুলোকে তা দেওয়ার পালা। দুই সপ্তাহ পর ডিম পোনা মাছে পরিণত হয়। পিতার পেটের মধ্যে থাকা থলেতে পোনা মাছগুলো কিলবিল করতে থাকে। এক সময় থলে থেকে পোনাগুলো বেরিয়ে আসে আর বাবার কাছে ঘুর ঘুর করতে থাকে। আর বড় কিছু দেখে ভয় পেলে দৌড়ে আবার বাবার নিরাপদ থলেতে আশ্রয় নেয়। বাবাও এর জন্য তৈরি থাকে। মা মাছটিকে ডিম পাড়ার পর আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না। এ ব্যবস্থা দ্বীপ মহাদেশ অস্ট্রেলিয়ার ক্যাঙারুর কথা মনে করিয়ে দেয়। আমরা নিশ্চয়ই জানি বাচ্চা লালন-পালনের জন্য ক্যাঙারুর পেটের অংশেও একটি থলে থাকে। যেখানে মুখ বের করে বাচ্চা-ক্যাঙ্গারু বসে আছে, এমন ছবি আমরা প্রায়ই দেখতে পাই।
মো. আসাদুজ্জামান
মুলসুত্র: http://www.bangladesh-pratidin.com/?view=details&archiev=yes&arch_date=11-12-2010&type=gold&data=Hotel&pub_no=225&cat_id=3&menu_id=16&news_type_id=1&index=3
No comments:
Post a Comment