বড় কোনো দুর্ঘটনার কবলে পড়লে বা খুব খারাপ কোনো খবর শুনলে অনেক সময় মানুষের স্মৃতিশক্তি লোপ পায়। এ রকম অবস্থায় পড়লে মানুষ তার অতীতের সবকিছু ভুলে যায়, এমনকি বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন কাউকেই চিনতে পারে না। নিজের নামও বেমালুম ভুলে যায়। মনোবিজ্ঞানে একে বলা হয়, অস্মার বা স্মৃতিভ্রংশ (amnesia)। বিভিন্ন কারণেই স্মৃতিশক্তি লোপ পেতে পারে। যেমন_ মাথায় চোট লাগা, মনে কোনো বড় কষ্ট পাওয়া, অস্বাভাবিক ক্লান্তি, ওষুধপত্তরের কুফল, মাথার সার্জারি, মনের মধ্যে দারুণ টানাপড়েন, খুব বুড়ো হয়ে পড়া, বেশিরকম নেশা করা। এ রকম অনেক কারণেই স্মৃতিশক্তি লোপ পেতে পারে। কারণ যাই হোক, স্মৃতিভ্রংশ ঘটলে তার ফলাফল সব ক্ষেত্রেই এক রকম। মাথার মধ্যে নিউরন (neuron) হলো সব ধরনের স্মৃতির এক হিসেবে ভাঁড়ার ঘর। যেভাবেই হোক, এই নিউরনরা যদি আক্রান্ত হয় তাহলে স্মৃতি লোপ পায়। মাথার মধ্যে এ নিউরনের কাজ হলো বিভিন্ন সময় যা কিছু ঘটে চলেছে তার হিসাব রাখা। তাই যদি কখনো নিউরনরা কোনো ঝামেলায় পড়ে তাহলে তাদের জমার হিসাব ভণ্ডুল হয়ে স্মৃতিভ্রংশ ঘটায়।
স্মৃতি লোপ পেলে ঘটনাটি ঘটার আগে বা পরের সবকিছুই একদম মুছে যায়। এরকম অবস্থা, এক-আধ সপ্তাহ, মাস বা বছর ধরে থাকতে পারে, আবার কখনোবা সারা জীবন। মজার কথা হলো পুরনো স্মৃতি যদি ফিরে আসে, তাহলে আবার স্মৃতিবিভ্রংশ অবস্থায় যা যা ঘটেছে তা আর কিছুই মনে পড়বে না। তবে এটাও ঠিক, স্মৃতিভ্রংশ একবার ঘটলে কিছু কিছু ফল থেকেই যায়, স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই এ রকম স্মৃতিভ্রংশ অবস্থা যদি কখনো ঘটে, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তার দেখানো উচিত। বুড়ো হলে অবশ্য স্মৃতিশক্তি একটু লোপ পায়। তবুও পেটে ঘা, হাই ব্লাডপ্রেসার, হাঁপানি, এরকম রোগের কারণেও গোলমাল দেখা দিতে পারে।
আমিন রহমান নবাব
মুল সুত্র:
http://www.bangladesh-pratidin.com/?view=details&archiev=yes&arch_date=29-11-2010&type=pratidin&pub_no=213&cat_id=3&menu_id=16&news_type_id=1&index=4
1 comment:
স্মৃতিশক্তি সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ একটি লেখা। ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।
Post a Comment