ক্রিস্টিয়ান গুস্তাভসন হাঁটু পানিতে দাঁড়িয়ে যত দূর চোখ যায় দেখছেন মিসিসিপি নদী। উত্তর আমেরিকার সবচেয়ে বড় নদী মিসিসিপি। সেই মিনোসোটার হ্রদ থেকে শুরু হয়ে বয়ে গেছে মেক্সিকো উপসাগর অবধি। অর্থনৈতিক মন্দা আর আধুনিক জীবনযাত্রার নানা ঝক্কি পোহাতে পোহাতে কার খেয়াল আছে মিসিসিপির কথা? অথচ একে ঘিরেই গড়ে উঠেছে অনেক শহর! গুস্তাভসনকে ভাবিয়ে তুলেছে মিসিসিপি নদীর দূষণ। গুস্তাভসনের পাশে ঢেউয়ে দোল খাচ্ছে তাঁর নৌকা। পরিবেশসচেতন গুস্তাভসন অভিনব এক অভিযাত্রায় বের হয়েছেন—মিসিসিপি আর এর শাখানদী অ্যাটচাফালায়াতে দিন-রাত নৌকা বেয়ে অন্যদের দেখাবেন কীভাবে হারিয়ে যাচ্ছে মিসিসিপির নাব্যতা, কীভাবে দূষিত হচ্ছে এই নদী।
জুন ২০০৮-এর বন্যা-পরবর্তী সময়ে গুস্তাভসন যাত্রা আরম্ভ করেছিলেন মিসিসিপি থেকে কোর্ট ডেভিয়্যান্স, ইলিনয় হয়ে ব্যাটন রক আর লুইজিয়ানা। দেড় বছর পর এখন চলছে যাত্রা সাঙ্গ করার পালা। বাকি আছে আট দিন, আর ২২৫ কিলোমিটার নদীপথ। গুস্তাভসনের অবিরাম নৌকা চালনায়, তাঁর জোর প্রচারণায় নদীটি উঠে এসেছে বিশেষজ্ঞদের আলোচনায়। শেষ আট দিনে গুস্তাভসনের সঙ্গে থাকার কথা আছে বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞসহ পরিবেশবিষয়ক সচেতনতা সৃষ্টির কাজে নিয়োজিত অনেক স্বেচ্ছাসেবকের। গুস্তাভসন এই যাত্রার মধ্য দিয়ে উপায় বের করার চেষ্টা করবেন—কীভাবে প্রতিরোধ করা যায় মিসিসিপির দূষণ, কীভাবে বাঁচানো যাবে মিসিসিপিকে।
৭ ফেব্রুয়ারি ২০১০, দেড় বছর বিরতি দিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন গুস্তাভসন।
দিনভর নৌকা চলে নদীর বুকে, রাতে নৌকা ছেড়ে নদীর পাড় ঘেঁষে ক্যাম্প। সেখানে অন্যদের সঙ্গে মতবিনিময় নদী আর নদীর অবস্থা নিয়ে। যাত্রাপথের এই সঙ্গীরা হলেন গাই ম্যাকক্লেলান, জেরার্ড ফ্রিসকিলো, কাম্পা জন রাস্কিসহ অনেকে। গুস্তাভের যাত্রায় এসে আরও যোগ দেন বাস্তুযোদ্ধারা। পেশাদার সার্ভেয়ার জেমস প্রিব্রামকে সঙ্গে নিয়ে নৌকা আরও সামনে এগোয়। স্থানীয় আর্মিদের প্রকৌশলী ও পাখিবিশেষজ্ঞরা আসেন তাঁদের পর্যবেক্ষণ ইতিহাস নিয়ে—মিসিসিপি দূষণমুক্ত না হলে হুমকি হয়ে দাঁড়াবে অতিথি পাখিদের জন্যও। আডিউবোন সোসাইটি ক্লাবের মেলানি ড্রিসকল অভিযাত্রিকদের ব্যাখ্যা করেন কীভাবে নদীর চারপাশের প্রাকৃতিক জলা, সবুজ বনাঞ্চল ও গাছগাছালি হারিয়ে যাচ্ছে। স্প্যানিশ মস, সাইপ্রেসসহ এ অঞ্চলের উদ্ভিদগুলো কীভাবে মানুষের নিয়ত আগ্রাসনের শিকারে পরিণত হচ্ছে। আশ্রয়হীন হয়ে পড়ছে পাখি, পোকামাকড় আর জলজ প্রাণীরা।
নদীতে আবর্জনা সরানোর কাজে নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবক দলগুলোও গুস্তাভসনের এ অভিনব যাত্রায় সঙ্গী হয়। সাপখোপ, বিষাক্ত পোকামাকড়, মথ, মশা-মাছি, মাকড়সা আর শীতল পানি—সব মিলিয়ে একেকটা দিন ছিল গুস্তাভের কাছে চ্যালেঞ্জ। গুস্তাভের এ অভিযাত্রা অনেকটা মার্ক টোয়েনের লাইভ অন দ্য মিসিসিপি’ কাহিনীর মতো।
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১০। গুস্তাভের নদীযাত্রা এসে শেষ হলো মেক্সিকো উপসাগর থেকে ৩২ কিলোমিটার দূরে লুইজিয়ানার ফল্ট লেকে। তাঁর এই অভিনব অভিযাত্রায় আর কিছু না হোক মানুষের মাঝে সচেতনতা তৈরি হয়েছে, কলকারখানার বর্জ্য, মানুষের নদীর সঙ্গে বিরূপ সম্পর্ক, নদীদস্যুদের আক্রমণ মিসিসিপিকে দূষণের দিকে ঠেলে দিয়েছে, এ থেকে সহজে মুক্তি মিলবে না, কিন্তু এটা মিসিসিপিকে বাঁচানোর আন্দোলনের শুরু, এখান থেকেই শুরু হবে আরও নতুন নতুন উদ্যোগের। আপাতত গুস্তাভ ফিরে যাচ্ছেন সমুদ্রবিদ্যায় উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনে। গুস্তাভের মিসিসিপি বাঁচাও আন্দোলন এখন এগিয়ে নিয়ে যাবে অন্য অনেক পরিবেশসচেতন মিসিসিপিবাসী।
শিখ্তী সানী, সূত্র: রিডার ডাইজেস্ট। | তারিখ: ২৯-১০-২০১০
জুন ২০০৮-এর বন্যা-পরবর্তী সময়ে গুস্তাভসন যাত্রা আরম্ভ করেছিলেন মিসিসিপি থেকে কোর্ট ডেভিয়্যান্স, ইলিনয় হয়ে ব্যাটন রক আর লুইজিয়ানা। দেড় বছর পর এখন চলছে যাত্রা সাঙ্গ করার পালা। বাকি আছে আট দিন, আর ২২৫ কিলোমিটার নদীপথ। গুস্তাভসনের অবিরাম নৌকা চালনায়, তাঁর জোর প্রচারণায় নদীটি উঠে এসেছে বিশেষজ্ঞদের আলোচনায়। শেষ আট দিনে গুস্তাভসনের সঙ্গে থাকার কথা আছে বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞসহ পরিবেশবিষয়ক সচেতনতা সৃষ্টির কাজে নিয়োজিত অনেক স্বেচ্ছাসেবকের। গুস্তাভসন এই যাত্রার মধ্য দিয়ে উপায় বের করার চেষ্টা করবেন—কীভাবে প্রতিরোধ করা যায় মিসিসিপির দূষণ, কীভাবে বাঁচানো যাবে মিসিসিপিকে।
৭ ফেব্রুয়ারি ২০১০, দেড় বছর বিরতি দিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন গুস্তাভসন।
দিনভর নৌকা চলে নদীর বুকে, রাতে নৌকা ছেড়ে নদীর পাড় ঘেঁষে ক্যাম্প। সেখানে অন্যদের সঙ্গে মতবিনিময় নদী আর নদীর অবস্থা নিয়ে। যাত্রাপথের এই সঙ্গীরা হলেন গাই ম্যাকক্লেলান, জেরার্ড ফ্রিসকিলো, কাম্পা জন রাস্কিসহ অনেকে। গুস্তাভের যাত্রায় এসে আরও যোগ দেন বাস্তুযোদ্ধারা। পেশাদার সার্ভেয়ার জেমস প্রিব্রামকে সঙ্গে নিয়ে নৌকা আরও সামনে এগোয়। স্থানীয় আর্মিদের প্রকৌশলী ও পাখিবিশেষজ্ঞরা আসেন তাঁদের পর্যবেক্ষণ ইতিহাস নিয়ে—মিসিসিপি দূষণমুক্ত না হলে হুমকি হয়ে দাঁড়াবে অতিথি পাখিদের জন্যও। আডিউবোন সোসাইটি ক্লাবের মেলানি ড্রিসকল অভিযাত্রিকদের ব্যাখ্যা করেন কীভাবে নদীর চারপাশের প্রাকৃতিক জলা, সবুজ বনাঞ্চল ও গাছগাছালি হারিয়ে যাচ্ছে। স্প্যানিশ মস, সাইপ্রেসসহ এ অঞ্চলের উদ্ভিদগুলো কীভাবে মানুষের নিয়ত আগ্রাসনের শিকারে পরিণত হচ্ছে। আশ্রয়হীন হয়ে পড়ছে পাখি, পোকামাকড় আর জলজ প্রাণীরা।
নদীতে আবর্জনা সরানোর কাজে নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবক দলগুলোও গুস্তাভসনের এ অভিনব যাত্রায় সঙ্গী হয়। সাপখোপ, বিষাক্ত পোকামাকড়, মথ, মশা-মাছি, মাকড়সা আর শীতল পানি—সব মিলিয়ে একেকটা দিন ছিল গুস্তাভের কাছে চ্যালেঞ্জ। গুস্তাভের এ অভিযাত্রা অনেকটা মার্ক টোয়েনের লাইভ অন দ্য মিসিসিপি’ কাহিনীর মতো।
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১০। গুস্তাভের নদীযাত্রা এসে শেষ হলো মেক্সিকো উপসাগর থেকে ৩২ কিলোমিটার দূরে লুইজিয়ানার ফল্ট লেকে। তাঁর এই অভিনব অভিযাত্রায় আর কিছু না হোক মানুষের মাঝে সচেতনতা তৈরি হয়েছে, কলকারখানার বর্জ্য, মানুষের নদীর সঙ্গে বিরূপ সম্পর্ক, নদীদস্যুদের আক্রমণ মিসিসিপিকে দূষণের দিকে ঠেলে দিয়েছে, এ থেকে সহজে মুক্তি মিলবে না, কিন্তু এটা মিসিসিপিকে বাঁচানোর আন্দোলনের শুরু, এখান থেকেই শুরু হবে আরও নতুন নতুন উদ্যোগের। আপাতত গুস্তাভ ফিরে যাচ্ছেন সমুদ্রবিদ্যায় উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনে। গুস্তাভের মিসিসিপি বাঁচাও আন্দোলন এখন এগিয়ে নিয়ে যাবে অন্য অনেক পরিবেশসচেতন মিসিসিপিবাসী।
শিখ্তী সানী, সূত্র: রিডার ডাইজেস্ট। | তারিখ: ২৯-১০-২০১০
তথ্যসুত্র: http://www.prothom-alo.com/detail/date/2010-10-29/news/104932
No comments:
Post a Comment