প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, পুরাকীর্তি, আধুনিক ও প্রাচীন স্থাপত্য শিল্পের জন্য বিশ্ববাসী তথা পর্যটকদের কাছে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে ভারত। দেশটির বিভিন্ন শহরে আজও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে মুঘল ও ব্রিটিশ স্থাপত্যগুলো। ভারতে যতগুলো শহর আছে তার মধ্যে লক্ষ্নৌ পর্যটকদের পছন্দের তালিকায় প্রথম সারিতে স্থান করে নিয়েছে। ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের অন্যতম শহর লক্ষ্নৌ।
ইতিহাস, দশেরি আম, কারুকাজ, আতরের সুবাস, মুজরার বোল, বিরিয়ানির খোশবাই_ এই নিয়ে নবাবি লক্ষ্নৌ। অধিকাংশ ইমারত নবাব সুজা-উদ-দৌলা ও নবাব আসফ-উদ-দৌলার হাতে তৈরি। আজকের লক্ষ্নৌয়ে অতীত ও বর্তমান সহাবস্থান করছে। এপারে প্রাচীন 'সিটি অব আদাব অ্যান্ড কাবাব' তো ওপারে নতুন সাহারা নগরী। মাঝখানে কালের স্মৃতিভার বুকে নিয়ে বয়ে চলেছে গোমতী নদী।
সারা বছরই পর্যটকদের সাদর আপ্যায়ন করে চলেছে এই 'গোল্ডেন সিটি অব দ্য ইস্ট'।
লক্ষ্নৌর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছিল অনেক আগে থেকেই। যেমন_ বড়া (বড়) ইমামবাড়া, ছোটা ইমামবাড়া, ক্লক টাওয়ার, দ্য রেসিডেন্সি, কাইজারবাগ বরাদরি, সাত্তার মঞ্জিল, সাহারা নগর ইত্যাদি। নবাবি লক্ষ্নৌর সঙ্গে পরিচয় শুরু হয় রুমি দরজা (ফটক) দিয়ে। এই ফটক দিয়ে প্রবেশ করতে হয় ঐতিহাসিক নগরী লক্ষ্নৌতে। চারবাগ স্টেশন থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে। ৬০ ফুট উচ্চতার অসাধারণ কারুকাজ করা এই দরজার প্রকৃত নাম 'টার্কিশ গেট'। নবাব অসফ-উদ-দৌলা এটি কনস্ট্যান্টিনোপলের আদলে তৈরি করেছিলেন। এটা পার হলেই ঢোকা যায় বড় ইমামবাড়ায়। ইমামবাড়ায় ঢুকলে মনে হবে আপনি হয়তো পুরনো ঢাকার বড়কাটারা ও ছোটকাটরার আশপাশে অবস্থান করছেন। এগুলো দেখে একবার হলেও মনে হবে, আমাদের দেশের অনেক স্থাপত্য মুঘল আমলে তৈরি। অনেক কিছুরই তুলনা করতে পারবেন ঢাকার স্থাপত্যের সঙ্গে। এই শহরের অন্যতম আকর্ষণীয় ও মজাদার খাবার হলো কাবাব। শহরের আনাচে-কানাচে বেশির ভাগ দোকানেই বিক্রি করে এসব খাবার। অনেকেই এ শহরকে বলে থাকেন সিটি অব কাবাব। এই কাবাবের খ্যাতি ভারতবর্ষ পেরিয়ে ব্রিটিশ রাজ দরবার পর্যন্ত চলে গিয়েছিল। তাই তো সে সময় লক্ষ্নৌ থেকে বাবুর্চি নিয়ে ব্রিটিশ রাজপ্রাসাদে আয়োজন করা হয়েছিল কাবাব উৎসবের। ইমামবাড়া থেকে একটু ডানদিকে এগুলে চোখে পড়বে আসফ-উদ-দৌলা মসজিদ আর বাঁ-দিকে বাওলি। শহরের অনেক দূর থেকেও এই মসজিদের দুটি মিনার দেখা যায়। ১৪তলা প্রাসাদপুরীর ৫০ ফুট উচ্চতার হলঘর পেরিয়ে আরও অবাক লাগে যখন আপনি পেঁৗছবেন ভুলভুলাইয়ায়। পিলারের পর পিলার, সিঁড়ির পর সিঁড়ি, এলাছায়া অলিন্দ। আন্তঃগোলকধাঁধা। অনেকে বলে, এখানে নবাব-বেগম লুকোচুরি খেলতেন। আসলে তা নয়। শত্রুদের আক্রমণ থেকে বাঁচতেই এমনভাবে তৈরি করা হয়েছিল। পথ চিনে নেওয়ার জন্য সঙ্গে গাইড নিলে ভালো হয়। অন্যথায় ভুলভুলাইয়ার ধাঁধায় পড়ে সময় নষ্ট হতে পারে। ইমামবাড়ার মাথা থেকে পুরো লক্ষ্নৌ শহর দেখতে অসাধারণ লাগে। এই মাত্রাটা আরও বেড়ে যায় চাঁদনি রাতে যখন চাঁদের আলো ছড়িয়ে পড়ে শহরজুড়ে। বড় ইমামবাড়া থেকে আধা কিলোমিটার পথ পেরুলেই ছোট ইমামবাড়া। এটি মহম্মদ আলী শাহ তৈরি করেছিলেন। আকারে ছোট হলেও স্থাপত্যে টেক্কা দিতে পারে বাকি সব ইমারতকে। ঢুকতেই জলাশয়। জলাশয়ে ইমামবাড়ার ছায়া পড়ে এক মায়াবী পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। তিনটি গম্বুজ, একটি আবার সোনার। অন্দরমহলে রয়েছে শিশমহল, রুপোর সিংহাসন, হরেক তাজিয়া, দেশি-বিদেশি ঝাড়-লণ্ঠন। রয়েছে তাজমহলের আদলে একটি সমাধিক্ষেত্র। ছোট ইমামবাড়া ও বড় ইমামবাড়ার ঠিক মাঝে রয়েছে আরেকটি স্থাপত্যকীর্তি, ক্লক টাওয়ার। এর উচ্চতা ২২১ ফুট। ভারতের বৃহত্তম ঘড়ি এটা। তৎকালীন প্রায় ২ লাখ টাকা ব্যয়ে নবাব নাসিরউদ্দিন হায়দার তৈরি করেছিলেন এটি। শোনা যায়, চারকোণের এই ক্লক টাওয়ার তৈরির সময় সোনায় মুড়ে দেওয়া হয়েছিল। আর একটু এগুলেই হুসেনাবাদ পিকচার গ্যালারি। লক্ষ্নৌ নবাবদের বিভিন্ন প্রতিকৃতি এই মিউজিয়ামের সম্পদ। এসব দেখে নিয়ে অনায়াসেই ঢুকে পড়া যায় চিকনপট্টিতে। বড় ইমামবাড়ার ঠিক উল্টো পথে চারবাগ স্টেশন থেকে ৭ কি.মি দূরে অবস্থিত শাহ নজফ ইমামবাড়া। গোমতীর তীরে এই ইমামবাড়ায় নবাব গাজী উদ্দিন হায়দার ও তার ৩ বেগমের সমাধি রয়েছে। শোনা যায়, এখানেই নাকি সিপাহি বিদ্রোহের প্রথম আন্দোলন শুরু হয়েছিল। এখান থেকে ২ কি.মি. পথ এগুলেই দ্য রেসিডেন্সি। ইংরেজ রাজকর্মচারীদের থাকার জন্য তৈরি হয়েছিল এটি। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের অনেক উত্থান-পতনের নীরব সাক্ষী। বর্তমানে অনেকেই একে লাভার্স পয়েন্ট বলে থাকেন। বিকালে এখানে প্রেমিকযুগলরা ঘুরতে আসেন। আসেন সময় পার করতে, শহরের কোলাহল থেকে দূর থাকতে। হঠাৎ করে দেখলে যে কারও মনে হতে পারে আপনি হয়তো ঢাকার চন্দ্রিমা অথবা রমনা উদ্যানে অবস্থান করছেন। লার্ভাস পয়েন্টের আশপাশে এখনও খুঁজে পাওয়া যায় প্রাচীন স্থাপত্য শিল্পের ছোঁয়া। দেখতে পাওয়া যায় কিছু প্রাচীরের ক্ষতচিহ্ন। দেয়ালে কান পাতলে শোনা যায় মানুষের হাহাকার। পাশেই চা-কফির দোকানে গলা ভিজিয়ে নেওয়ারও ব্যবস্থা রয়েছে। লক্ষ্নৌর নতুন দ্রষ্টব্য সাহারা সিটি। অনেকটা আমাদের দেশের বসুন্ধরা প্রকল্পের মতো। যেখানে রয়েছে আধুনিক বিশ্বের সব উপকরণ। এই সিটির রাস্তা থেকে শুরু করে ঘরবাড়ি পর্যন্ত সবখানে পাওয়া যায় আধুনিকতার ছোঁয়া। ট্যুরিস্ট হিসেবে অনুমতি নিয়ে যে কেউ ঘুরে আসতে পারেন এই আধুনিক সিটিতে।
ইতিহাস, দশেরি আম, কারুকাজ, আতরের সুবাস, মুজরার বোল, বিরিয়ানির খোশবাই_ এই নিয়ে নবাবি লক্ষ্নৌ। অধিকাংশ ইমারত নবাব সুজা-উদ-দৌলা ও নবাব আসফ-উদ-দৌলার হাতে তৈরি। আজকের লক্ষ্নৌয়ে অতীত ও বর্তমান সহাবস্থান করছে। এপারে প্রাচীন 'সিটি অব আদাব অ্যান্ড কাবাব' তো ওপারে নতুন সাহারা নগরী। মাঝখানে কালের স্মৃতিভার বুকে নিয়ে বয়ে চলেছে গোমতী নদী।
সারা বছরই পর্যটকদের সাদর আপ্যায়ন করে চলেছে এই 'গোল্ডেন সিটি অব দ্য ইস্ট'।
লক্ষ্নৌর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছিল অনেক আগে থেকেই। যেমন_ বড়া (বড়) ইমামবাড়া, ছোটা ইমামবাড়া, ক্লক টাওয়ার, দ্য রেসিডেন্সি, কাইজারবাগ বরাদরি, সাত্তার মঞ্জিল, সাহারা নগর ইত্যাদি। নবাবি লক্ষ্নৌর সঙ্গে পরিচয় শুরু হয় রুমি দরজা (ফটক) দিয়ে। এই ফটক দিয়ে প্রবেশ করতে হয় ঐতিহাসিক নগরী লক্ষ্নৌতে। চারবাগ স্টেশন থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে। ৬০ ফুট উচ্চতার অসাধারণ কারুকাজ করা এই দরজার প্রকৃত নাম 'টার্কিশ গেট'। নবাব অসফ-উদ-দৌলা এটি কনস্ট্যান্টিনোপলের আদলে তৈরি করেছিলেন। এটা পার হলেই ঢোকা যায় বড় ইমামবাড়ায়। ইমামবাড়ায় ঢুকলে মনে হবে আপনি হয়তো পুরনো ঢাকার বড়কাটারা ও ছোটকাটরার আশপাশে অবস্থান করছেন। এগুলো দেখে একবার হলেও মনে হবে, আমাদের দেশের অনেক স্থাপত্য মুঘল আমলে তৈরি। অনেক কিছুরই তুলনা করতে পারবেন ঢাকার স্থাপত্যের সঙ্গে। এই শহরের অন্যতম আকর্ষণীয় ও মজাদার খাবার হলো কাবাব। শহরের আনাচে-কানাচে বেশির ভাগ দোকানেই বিক্রি করে এসব খাবার। অনেকেই এ শহরকে বলে থাকেন সিটি অব কাবাব। এই কাবাবের খ্যাতি ভারতবর্ষ পেরিয়ে ব্রিটিশ রাজ দরবার পর্যন্ত চলে গিয়েছিল। তাই তো সে সময় লক্ষ্নৌ থেকে বাবুর্চি নিয়ে ব্রিটিশ রাজপ্রাসাদে আয়োজন করা হয়েছিল কাবাব উৎসবের। ইমামবাড়া থেকে একটু ডানদিকে এগুলে চোখে পড়বে আসফ-উদ-দৌলা মসজিদ আর বাঁ-দিকে বাওলি। শহরের অনেক দূর থেকেও এই মসজিদের দুটি মিনার দেখা যায়। ১৪তলা প্রাসাদপুরীর ৫০ ফুট উচ্চতার হলঘর পেরিয়ে আরও অবাক লাগে যখন আপনি পেঁৗছবেন ভুলভুলাইয়ায়। পিলারের পর পিলার, সিঁড়ির পর সিঁড়ি, এলাছায়া অলিন্দ। আন্তঃগোলকধাঁধা। অনেকে বলে, এখানে নবাব-বেগম লুকোচুরি খেলতেন। আসলে তা নয়। শত্রুদের আক্রমণ থেকে বাঁচতেই এমনভাবে তৈরি করা হয়েছিল। পথ চিনে নেওয়ার জন্য সঙ্গে গাইড নিলে ভালো হয়। অন্যথায় ভুলভুলাইয়ার ধাঁধায় পড়ে সময় নষ্ট হতে পারে। ইমামবাড়ার মাথা থেকে পুরো লক্ষ্নৌ শহর দেখতে অসাধারণ লাগে। এই মাত্রাটা আরও বেড়ে যায় চাঁদনি রাতে যখন চাঁদের আলো ছড়িয়ে পড়ে শহরজুড়ে। বড় ইমামবাড়া থেকে আধা কিলোমিটার পথ পেরুলেই ছোট ইমামবাড়া। এটি মহম্মদ আলী শাহ তৈরি করেছিলেন। আকারে ছোট হলেও স্থাপত্যে টেক্কা দিতে পারে বাকি সব ইমারতকে। ঢুকতেই জলাশয়। জলাশয়ে ইমামবাড়ার ছায়া পড়ে এক মায়াবী পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। তিনটি গম্বুজ, একটি আবার সোনার। অন্দরমহলে রয়েছে শিশমহল, রুপোর সিংহাসন, হরেক তাজিয়া, দেশি-বিদেশি ঝাড়-লণ্ঠন। রয়েছে তাজমহলের আদলে একটি সমাধিক্ষেত্র। ছোট ইমামবাড়া ও বড় ইমামবাড়ার ঠিক মাঝে রয়েছে আরেকটি স্থাপত্যকীর্তি, ক্লক টাওয়ার। এর উচ্চতা ২২১ ফুট। ভারতের বৃহত্তম ঘড়ি এটা। তৎকালীন প্রায় ২ লাখ টাকা ব্যয়ে নবাব নাসিরউদ্দিন হায়দার তৈরি করেছিলেন এটি। শোনা যায়, চারকোণের এই ক্লক টাওয়ার তৈরির সময় সোনায় মুড়ে দেওয়া হয়েছিল। আর একটু এগুলেই হুসেনাবাদ পিকচার গ্যালারি। লক্ষ্নৌ নবাবদের বিভিন্ন প্রতিকৃতি এই মিউজিয়ামের সম্পদ। এসব দেখে নিয়ে অনায়াসেই ঢুকে পড়া যায় চিকনপট্টিতে। বড় ইমামবাড়ার ঠিক উল্টো পথে চারবাগ স্টেশন থেকে ৭ কি.মি দূরে অবস্থিত শাহ নজফ ইমামবাড়া। গোমতীর তীরে এই ইমামবাড়ায় নবাব গাজী উদ্দিন হায়দার ও তার ৩ বেগমের সমাধি রয়েছে। শোনা যায়, এখানেই নাকি সিপাহি বিদ্রোহের প্রথম আন্দোলন শুরু হয়েছিল। এখান থেকে ২ কি.মি. পথ এগুলেই দ্য রেসিডেন্সি। ইংরেজ রাজকর্মচারীদের থাকার জন্য তৈরি হয়েছিল এটি। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের অনেক উত্থান-পতনের নীরব সাক্ষী। বর্তমানে অনেকেই একে লাভার্স পয়েন্ট বলে থাকেন। বিকালে এখানে প্রেমিকযুগলরা ঘুরতে আসেন। আসেন সময় পার করতে, শহরের কোলাহল থেকে দূর থাকতে। হঠাৎ করে দেখলে যে কারও মনে হতে পারে আপনি হয়তো ঢাকার চন্দ্রিমা অথবা রমনা উদ্যানে অবস্থান করছেন। লার্ভাস পয়েন্টের আশপাশে এখনও খুঁজে পাওয়া যায় প্রাচীন স্থাপত্য শিল্পের ছোঁয়া। দেখতে পাওয়া যায় কিছু প্রাচীরের ক্ষতচিহ্ন। দেয়ালে কান পাতলে শোনা যায় মানুষের হাহাকার। পাশেই চা-কফির দোকানে গলা ভিজিয়ে নেওয়ারও ব্যবস্থা রয়েছে। লক্ষ্নৌর নতুন দ্রষ্টব্য সাহারা সিটি। অনেকটা আমাদের দেশের বসুন্ধরা প্রকল্পের মতো। যেখানে রয়েছে আধুনিক বিশ্বের সব উপকরণ। এই সিটির রাস্তা থেকে শুরু করে ঘরবাড়ি পর্যন্ত সবখানে পাওয়া যায় আধুনিকতার ছোঁয়া। ট্যুরিস্ট হিসেবে অনুমতি নিয়ে যে কেউ ঘুরে আসতে পারেন এই আধুনিক সিটিতে।
সুত্র: http://www.bangladesh-pratidin.com/?view=details&archiev=yes&arch_date=31-10-2010&type=pratidin&pub_no=187&cat_id=3&menu_id=16&news_type_id=1&index=0
No comments:
Post a Comment