১৯১০ সালের ৪ এপ্রিল গান্ধী ইয়াসনায়া পলিয়ানার খামারে বসবাসরত ঋষি তলস্তয়কে জানালেন, তিনি তাঁর নিবেদিত অনুসারী, তাঁর রচনা থেকেই তিনি অনুপ্রেরণা পেয়েছেন। মৃত্যুর ঠিক দুই মাস আগে, দুঃখজনক ও নাটকীয় মৃত্যুর আগে তলস্তয়ও গান্ধীকে একটি আন্তরিক পত্রে অহিংস তত্ত্ব নিয়ে তাঁর মনোভাব ব্যক্ত করেছেন। গান্ধী ও তলস্তয়ের মৌলিক মিল—দুজনেই ভালোবাসার আইন ও অহিংস দর্শনের প্রণেতা। তলস্তয়ের কনফেশন এবং গান্ধীর স্টোরি অব মাই এক্সপেরিমেন্ট উইথ ট্রুথ-এ এই ঐক্যের চিত্র অঙ্কিত। যিশু যেখানে বলেছেন, অন্য গাল পেতে দেবে, ঈশ্বর যেখানে আদেশ দিয়েছেন, হত্যা করবে না; সেখানে তোমরা মানুষ খুন করছ কীভাবে?
তলস্তয় লিখলেন, লেটার টু আ হিন্দু। (তাঁদের মধ্যে একাধিক চিঠি বিনিময় হয়) ১৯০৯ সালের ১০ ডিসেম্বর লন্ডনে ভিক্টোরিয়া স্ট্রিটের ওয়েস্টমিনস্টার প্যালেস হোটেলে অবস্থানকালে এ চিঠির সকৃতজ্ঞ জবাব দেন গান্ধী। চিঠির শেষে অনুরোধ জানান, তলস্তয় যদি তাঁর পত্রের জবাব দিতে ইচ্ছা প্রকাশ করেন, তাহলে যেন তা দক্ষিণ আফ্রিকায় জোহানেসবার্গের ডাকে প্রেরণ করেন। গান্ধীর অবস্থান তখন দক্ষিণ আফ্রিকায়।
গান্ধী লিখলেন:
মহোদয়,
লন্ডনে আমার স্বল্পকালীন অবস্থানকালে আমার প্রেরিত চিঠির কথা আপনার মনে থাকতে পারে। আপনার একজন সাধারণ অনুসারী হিসেবে আমার লেখা একটি পুস্তিকা প্রেরণ করছি। গুজরাটি ভাষায় লেখা এই বইটি অনুবাদ (ইংরেজি) আমি নিজেই করেছি। বড় কৌতূহলের বিষয়, এটি ভারত সরকার বাজেয়াপ্ত করেছে। সে জন্য তাড়াতাড়ি করে এই অনুবাদটি সম্পন্ন করেছি।
আমি উদ্বিগ্ন, পাছে আপনাকে বিরক্ত করি, যদি শরীরে কুলায়, আমার এই পুস্তিকা পাঠ করেন, তাহলে বলাই বাহুল্য, আমি আপনার সমালোচনাকে অত্যন্ত গুরুত্ব প্রদান করব।
আমি আপনার লেটার টু আ হিন্দুর কিছু কপি আপনার কাছে পাঠাচ্ছি। আপনি অনুগ্রহ করে আমাকে তা প্রকাশের অনুমতি দিয়েছিলেন। অপর একটি ভারতীয় ভাষায়ও তা প্রকাশিত হয়েছে।
আপনার নগণ্য ভৃত্য
এম কে গান্ধী।
৮ মে ১৯১০, তলস্তয় লিখলেন:
প্রিয় বন্ধু,
আপনার চিঠি এবং আপনার পাঠানো বই ইন্ডিয়ান হোম রুল কেবল আমার হাতে পৌঁছেছে। গভীর আগ্রহ নিয়ে আপনার বইটি পড়েছি; এই বইটিতে আপনি যে প্রশ্নটি তুলে ধরেছেন—অহিংস প্রতিরোধ—এটা কেবল ভারতের জন্য নয়, সমগ্র মানবতার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। আমি আপনার আগের চিঠিগুলো খুঁজে পাইনি কিন্তু জে ডসের লেখা আপনার জীবনীটি পেয়েছি—এটি পড়ে আপনার সম্পর্কে জানার আগ্রহ বোধ করছি—তবে এই মুহূর্তে ঠিক সুস্থতা বোধ করছি না, তাই জবাব লেখা ও আপনার বই সম্পর্কে মতামত জানানো থেকে বিরত থাকতে হচ্ছে, কিন্তু ভালো বোধ করা মাত্র এ বিষয়ে লিখব।
আপনার বন্ধু ও ভাই
লেভ তলস্তয়
আত্মজৈবনিক
হায়াৎ মামুদের লিয়েফ তলেস্তায় গ্রন্থ থেকে কিছু প্রাথমিক অংশ উদ্ধৃত করা হচ্ছে:
১৮৪৭: (তলস্তয়ের) জীবনের নীতিমালায় প্রতিজ্ঞা লিপিবদ্ধ হচ্ছে: ‘সকাল (৫টায়) উঠতে হবে। তাড়াতাড়ি ঘুমুতে যেতে হবে (৯টা থেকে ১০টার মধ্যে)...আহার সামান্য, মিষ্টি দিতে হবে...নিজ হাতে সব করতে হবে...সমগ্র জীবনের লক্ষ্যবিন্দু চাই, জীবনের যেকোনো পর্যায়ের জন্যও চাই লক্ষ্য, অপেক্ষাকৃত অল্প সময়ের জন্য লক্ষ্য এবং একেকটি বছরের জন্যও; প্রতি মাসের জন্য, প্রতি সপ্তাহের জন্য, প্রতিদিনের জন্য, প্রতি ঘণ্টার জন্য এবং প্রতি মিনিটের জন্য লক্ষ্য চাই, বৃহত্তর লক্ষ্যের জন্য ক্ষুদ্র লক্ষ্য বিসর্জন দিতে হবে’; ‘মেয়েদের কাছ থেকে দূরে থাকতে হবে’; ‘কাজের মাধ্যমে কামনাকে ধ্বংস করা’; ‘ভালো হতে হবে কিন্তু শোরগোল তুলে নয়’; ‘জীবনযাত্রার মান যেন না পাল্টায়’ ইত্যাদি।
তলস্তয় লিখলেন, লেটার টু আ হিন্দু। (তাঁদের মধ্যে একাধিক চিঠি বিনিময় হয়) ১৯০৯ সালের ১০ ডিসেম্বর লন্ডনে ভিক্টোরিয়া স্ট্রিটের ওয়েস্টমিনস্টার প্যালেস হোটেলে অবস্থানকালে এ চিঠির সকৃতজ্ঞ জবাব দেন গান্ধী। চিঠির শেষে অনুরোধ জানান, তলস্তয় যদি তাঁর পত্রের জবাব দিতে ইচ্ছা প্রকাশ করেন, তাহলে যেন তা দক্ষিণ আফ্রিকায় জোহানেসবার্গের ডাকে প্রেরণ করেন। গান্ধীর অবস্থান তখন দক্ষিণ আফ্রিকায়।
গান্ধী লিখলেন:
মহোদয়,
লন্ডনে আমার স্বল্পকালীন অবস্থানকালে আমার প্রেরিত চিঠির কথা আপনার মনে থাকতে পারে। আপনার একজন সাধারণ অনুসারী হিসেবে আমার লেখা একটি পুস্তিকা প্রেরণ করছি। গুজরাটি ভাষায় লেখা এই বইটি অনুবাদ (ইংরেজি) আমি নিজেই করেছি। বড় কৌতূহলের বিষয়, এটি ভারত সরকার বাজেয়াপ্ত করেছে। সে জন্য তাড়াতাড়ি করে এই অনুবাদটি সম্পন্ন করেছি।
আমি উদ্বিগ্ন, পাছে আপনাকে বিরক্ত করি, যদি শরীরে কুলায়, আমার এই পুস্তিকা পাঠ করেন, তাহলে বলাই বাহুল্য, আমি আপনার সমালোচনাকে অত্যন্ত গুরুত্ব প্রদান করব।
আমি আপনার লেটার টু আ হিন্দুর কিছু কপি আপনার কাছে পাঠাচ্ছি। আপনি অনুগ্রহ করে আমাকে তা প্রকাশের অনুমতি দিয়েছিলেন। অপর একটি ভারতীয় ভাষায়ও তা প্রকাশিত হয়েছে।
আপনার নগণ্য ভৃত্য
এম কে গান্ধী।
৮ মে ১৯১০, তলস্তয় লিখলেন:
প্রিয় বন্ধু,
আপনার চিঠি এবং আপনার পাঠানো বই ইন্ডিয়ান হোম রুল কেবল আমার হাতে পৌঁছেছে। গভীর আগ্রহ নিয়ে আপনার বইটি পড়েছি; এই বইটিতে আপনি যে প্রশ্নটি তুলে ধরেছেন—অহিংস প্রতিরোধ—এটা কেবল ভারতের জন্য নয়, সমগ্র মানবতার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। আমি আপনার আগের চিঠিগুলো খুঁজে পাইনি কিন্তু জে ডসের লেখা আপনার জীবনীটি পেয়েছি—এটি পড়ে আপনার সম্পর্কে জানার আগ্রহ বোধ করছি—তবে এই মুহূর্তে ঠিক সুস্থতা বোধ করছি না, তাই জবাব লেখা ও আপনার বই সম্পর্কে মতামত জানানো থেকে বিরত থাকতে হচ্ছে, কিন্তু ভালো বোধ করা মাত্র এ বিষয়ে লিখব।
আপনার বন্ধু ও ভাই
লেভ তলস্তয়
আত্মজৈবনিক
হায়াৎ মামুদের লিয়েফ তলেস্তায় গ্রন্থ থেকে কিছু প্রাথমিক অংশ উদ্ধৃত করা হচ্ছে:
১৮৪৭: (তলস্তয়ের) জীবনের নীতিমালায় প্রতিজ্ঞা লিপিবদ্ধ হচ্ছে: ‘সকাল (৫টায়) উঠতে হবে। তাড়াতাড়ি ঘুমুতে যেতে হবে (৯টা থেকে ১০টার মধ্যে)...আহার সামান্য, মিষ্টি দিতে হবে...নিজ হাতে সব করতে হবে...সমগ্র জীবনের লক্ষ্যবিন্দু চাই, জীবনের যেকোনো পর্যায়ের জন্যও চাই লক্ষ্য, অপেক্ষাকৃত অল্প সময়ের জন্য লক্ষ্য এবং একেকটি বছরের জন্যও; প্রতি মাসের জন্য, প্রতি সপ্তাহের জন্য, প্রতিদিনের জন্য, প্রতি ঘণ্টার জন্য এবং প্রতি মিনিটের জন্য লক্ষ্য চাই, বৃহত্তর লক্ষ্যের জন্য ক্ষুদ্র লক্ষ্য বিসর্জন দিতে হবে’; ‘মেয়েদের কাছ থেকে দূরে থাকতে হবে’; ‘কাজের মাধ্যমে কামনাকে ধ্বংস করা’; ‘ভালো হতে হবে কিন্তু শোরগোল তুলে নয়’; ‘জীবনযাত্রার মান যেন না পাল্টায়’ ইত্যাদি।
| তারিখ: ২৬-১১-২০১০
মুল সুত্র: http://www.prothom-alo.com/detail/date/2010-11-26/news/111075
No comments:
Post a Comment