ফসিলসমূহ পরীক্ষা দেখা গেছে যে, পৃথিবীর উৎপত্তি ও সৃষ্টির সময় থেকে আজ পর্যন্ত শত শত স্পেসিসেরা বা বিভিন্ন ধরনের প্রাণী ও উদ্ভিদ পৃথিবীতে সৃষ্ট হয়েছে এবং পরবর্তীতে তা সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। প্রথমত. প্রাকৃতিক কারণে এসব স্পেসিস বিলুপ্ত হয়ে যায়। যে সব প্রাণী ও উদ্ভিদ পৃথিবীর পরিবর্তিত অবস্থার সঙ্গে দ্রুতগতিতে নিজেদের মানিয়ে নিতে পারেনি অথবা যারা সে অবস্থায় প্রাপ্ত খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থায় নিজেদের খাদ্য সংগ্রহে প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় ব্যর্থও হয়েছে তারাই পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। অবশ্য অন্য উদাহরণও রয়েছে। যেমন ডাইনোসরদের ক্ষেত্রে। এদের বিলুপ্তির কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। বহু মিলিয়ন বছর আগে যেসব প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল মানুষ তাদের কখনও দেখতে পায়নি আবার এমন কিছু প্রাণী বিলুপ্ত হয়েছে যারা কয়েকশ বছরআগেও জীবিত ছিল। এবং এদের ক্ষেত্রে তাদের মৃত্যু ও বিলুপ্তির জন্য মানুষই দায়ী। গত কয়েকশ বছরের মধ্যে বেশকিছু প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে গেছে। ডোডো নামক একধরনের পাখি ছিল যারা সপ্তদশ শতাব্দীর শেষ দিকে বিলুপ্ত হয়ে যায়। ভারত মহাসাগরের ক্ষুদ্র মরিসাস দ্বীপে এ পাখি বাস করত। নাবিকেরা খাদ্যের প্রয়োজনে এদের বধ করত। ক্রমে কোনোরকম চিহ্ন না রেখে তারা পুরোপুরি বিলুপ্ত হয়ে যায়। ঠিক এ কাহিনীর পুনরাবৃত্তি ঘটে আরেকটি পাখির বিলুপ্তির ঘটনায়। ওই পাখিটির নাম গ্রেট আউক, পেঙ্গুইনের মতো দেখতে এ পাখি ১০০ বছর আগেও স্কটল্যান্ডের উত্তরে দ্বীপপুঞ্জে দেখা যেত। ডিম সংগ্রহকারীরা এবং শিকারিরা এদের বিলুপ্ত ঘটায় ১৮৪৪ সালে। আরেকটি বড় পাখির স্পেসিস হলো মোয়া। যারা আজ বিলুপ্তি হয়ে গেছে। এরা নিউজিল্যান্ডে বাস করত। এদের উচ্চতা ছিল ১০ ফুট। এরা অস্ট্রিচের মতো বৃহদাকার ছিল এবং উড়তে পারত না। খুব সম্ভবত মাওরিরা যখন ৬০০ বছর আগে নিউজিল্যান্ড দ্বীপে পেঁৗছায়, তখন তারা শিকার করে এদের বিলুপ্তি ঘটায়। শুধু পাখিরাই বিলুপ্তির দুর্ভাগ্য ভোগ করেনি, অন্য একটি বিখ্যাত স্তন্যপায়ী প্রাণীও বিলুপ্ত হয়েছে। সেটি হলো, সামুদ্রিক গরু। এই সামুদ্রিক গরু বা সি-কাউ পরিবারভুক্ত প্রাণী এখনও জীবিত আছে।
এরা হলো ম্যানাটিস এবং সাইরেন। তারা জলে বাস করে এবং দেখতে সিল-এর মতো। ১৭৮১ সালে বেরিং দ্বীপে জাহাজডুবির সময় রুশ পরিভ্রাজকরা সামুদ্রিক গরু দেখতে পান। আর তাই এগুলোও নাবিকদের শিকারের ফলে বিলুপ্ত হয়। এত হিংসভাবে তাদের শিকার হয়ে যে, ২৭ বছরের মধ্যে এ প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে যায়। এন্টিলোপ-এর মতো একটি প্রাণী অরিক্স আরব মরুভূমিতে শিকারের ফলে প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এরকম আরও অনেক প্রাণী হয়তো আজ পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
তথ্য সুত্র: http://www.bangladesh-pratidin.com/?view=details&archiev=yes&arch_date=30-10-2010&type=pratidin&pub_no=186&cat_id=3&menu_id=16&news_type_id=1&index=1
No comments:
Post a Comment