আফ্রিকার তথা পৃথিবীর দীর্ঘতম নদী নীল নদ মিসর ও সুদানকে জীবন দান করে। এটি ৬৬৪৮ কি.মি দীর্ঘ এবং টাঙ্গানিকা পর্বতমালা থেকে ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত আফ্রিকার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত। মিসরকে নীল নদীর দান বলা হয়, কারণ প্রতি বছর নীল নদে বন্যা হওয়ার ফলেই বিশেষভাবে এর উপত্যকা ভূমি অনেক উর্বর। জমির উর্বরতার ফলেই এই অঞ্চলের প্রাচীন অধিবাসীরা অত্যন্ত ঐশ্বর্যশালী ছিলেন এবং বহু দুঃখ-দুর্দশা অতিক্রম করতে সক্ষম হয়েছিলেন। নীল নদকে ভিত্তি করেই প্রাচীন মিসরীয়দের ধর্ম, সংস্কৃতি ও জীবনযাপনের ভিত্তিও গড়ে ওঠেছিল নদীর উৎসস্থলে ভিক্টোরিয়া, এলবার্ট এবং এডওয়ার্ড নামক হ্রদগুলো ভূ-বিষুব রেখা বা নিরক্ষ রেখার দক্ষিণে গ্রীষ্মমণ্ডলে অবস্থিত। সেখানে শীতকালেই বেশিরভাগ বৃষ্টি হয়। এই বিশাল হ্রদগুলো বর্ষার জল ধরে রাখে এবং সারা বছর ধরে ক্রমে ক্রমে এই জল নীল নদকে পুষ্ট করে। নীল বর্ণ নীল নদী এবং আটবারা নদীতে বর্ষার জল প্রচণ্ড বেগে আসার ফলেই বন্যা হয়। ইথিওপিয়ার পর্বতমালা থেকে নিম্নাভিমুখী গ্রীষ্মকালীন বর্ষার জলের সঙ্গে মাটি এবং সবজি (মাটিতে পরিণত জীবদেহ) ভেসে যায়। এ মাটিতে পরিণত শাক-সবজি মাটিসহ নীল নদীর তীর ভূমিতে ছড়িয়ে পড়ে। অতএব যে অঞ্চলে মরুভূমি থাকার কথা সে অঞ্চল সবুজ মরুদ্যানে পরিণত হয়। মিসরের জনজীবনে নীল নদের অবদান গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ৯৫ শতাংশ অধিবাসী নীল নদের তীরবর্তী অঞ্চলে বাস করে। নীল নদের সঠিক উৎস হলো কঙ্গোর পর্বতমালা যেখান থেকে কঙ্গো নদী ভিক্টোরিয়া হ্রদ পর্যন্ত প্রবাহিত। সেবাত ও অন্যান্য নদী নীল নদে এসে যুক্ত হয়ে তার জলপ্রবাহ বৃদ্ধি করছে। এখান থেকে উৎপত্তি হয় সাদা-নীল নদী। নীল রংয়ের নীল নদী হলো এ নদের সর্বাপেক্ষা উপনদী এবং তার উৎস হলো ইথিওপিয়ার তানা। খর্তুমে সাদা-নীল নদীও যুক্ত হয়েছে। সুদানে এসব জলপ্রপাত থেকে প্রচুর পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা হয়। এখানে জলপথ দিয়ে জলযান যাতায়াত করে। নীল নদের ওপর দুটি বড় ড্যাম বা জলাধার তৈরি করা হয়েছে। মিসরের বিদ্যুৎশক্তির বৃহৎ পরিমাণ অংশ ওই জলপ্রপাত থেকে উৎপন্ন হয়।
প্রীতম সাহা সুদীপ।
সুত্র: http://www.bangladesh-pratidin.com/?view=details&archiev=yes&arch_date=01-11-2010&type=pratidin&pub_no=188&cat_id=3&menu_id=16&news_type_id=1&index=7
No comments:
Post a Comment