পশ্চিমের ধ্রুপদী সংগীতজগতের এক বিশিষ্ট সুরস্রষ্টা ইয়োহান স্ট্রাউস। অস্ট্রিয়ার এই সংগীতকার ওয়ালৎস সংগীতের সম্রাট হিসেবে পরিচিত। ওয়ালৎস সংগীত ও তারই সুরে নাচ পাশ্চাত্য সংস্কৃতির এক বিরাট ঐতিহ্য। ইয়োহান স্ট্রাউস জুনিয়রের বিখ্যাত ওয়ালৎস সংগীত 'ব্লু দানিউব'কে বলা হয় অস্ট্রিয়ার বেসরকারি জাতীয় সংগীত। এই জনপ্রিয় সংগীতকারের জন্ম ১৮২৫ সালের ২৫ অক্টোবর ভিয়েনায়। বাবা ইয়োহান স্ট্রাউস ছিলেন একজন বিখ্যাত ওয়ালৎস সংগীতকার ও অর্কেস্ট্রা নির্দেশক। ছেলে সংগীতজগতে না এসে কোনো সরকারি পেশায় নিযুক্ত হোক এই ছিল বাবার ইচ্ছা। কিন্তু মা ছেলের সংগীতের প্রতি অনুরাগ ও তার প্রতিভার আঁচ করতে পেরে লুকিয়ে ছেলেকে সংগীত শিক্ষকের কাছে বেহালায় তালিম নিতে সহায়তা করেন। ১৮৪৪ সালের ১৫ অক্টোবর ইয়োহান স্ট্রাউস বাবার অনুমোদন ছাড়াই নিজস্ব অর্কেস্ট্রা নিয়ে প্রথম পরিবেশন করেন তার নিজের রচিত সংগীত। অসাধারণ সাফল্য পান তিনি। তারপর থেকেই ছড়িয়ে পড়ে তার জনপ্রিয়তা। ১৮৪৯ সালে খুব অল্প বয়সে বাবার মৃত্যুর পর ইয়োহান স্ট্রাউস তার বাবার অর্কেস্ট্রা দলের নির্দেশকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং এই দল নিয়েই বিশ্ব ভ্রমণে বেরিয়ে পড়েন তিনি। সমাজ সচেতন স্ট্রাউস ১৮৪৮ সালের বিপ্লবী আদর্শের প্রতি সমর্থন জানান। যার ফলে রাজন্যবর্গের সন্দেহের চোখে পড়েন তিনি। কিন্তু তার মেলোডিভরা প্রাণবন্ত সংগীত তাদের সেই মনোভাবকে বদলে দেয় খুব তাড়াতাড়ি। রাজদরবারে সংগীত নির্দেশকের পদে অভিষিক্ত হন তিনি। অসাধারণ জনপ্রিয়তা অর্জন করেন স্ট্রাউস। হিজিবিজি, কাটাকুটি করা তার হাতে লেখা স্বরলিপি, ডিজাইন আকারে ছাপা হয় টেবিল ক্লথ, ন্যাপকিন, রুমাল, চায়ের কাপ বা টাকার নোটে? পাঁচশরও বেশি ওয়ালৎস সংগীতের পাশাপাশি তিনি রচনা করেন অসংখ ছোট আকারের অপেরা, ব্যালে এবং একটি পূর্ণাঙ্গ অপেরা। নাচের মঞ্চে অংশগ্রহণকারীরা তার সংগীতের সঙ্গে একাত্ম হয়ে যেতেন। মজার কথা, স্ট্রাউস নিজে কিন্তু নাচতে পারতেন না। ১৮৯৯ সালের ৩ জুন ভিয়েনায় মৃত্যুবরণ করেন ওয়ালৎস সংগীত সম্রাট ইয়োহান স্ট্রাউস।
সাদিকুল নিয়োগী পন্নী।
সাদিকুল নিয়োগী পন্নী।
সুত্র: http://www.bangladesh-pratidin.com/?view=details&archiev=yes&arch_date=01-11-2010&type=pratidin&pub_no=188&cat_id=3&menu_id=16&news_type_id=1&index=2
No comments:
Post a Comment