Monday, October 4, 2010

 পাথর কেটে প্রাচীন বাড়ি |

ইরানের উত্তর-পশ্চিমের ছোট্ট একটা গ্রাম কান্দোভান। একটু দূর থেকে গ্রামের দিকে তাকালে মনে হয়, অনেক কোন আইসক্রিম যেন উল্টো করে বসিয়ে রেখেছে!
আরেকটু কাছে এগোলে বোঝা যায়, আইসক্রিম নয়, ওগুলো আসলে পাহাড়। পাহাড়? না, স্রেফ পাহাড় নয়। শত শত মানুষের ঘরবাড়ি ওই পাহাড়গুলোর বুকের মধ্যে। পাহাড়ে ঘরবাড়ি তো কতই থাকে। কিন্তু দুনিয়ার আর সব পাহাড়ি বাড়ির চেয়ে এ গ্রামটিকে আলাদা করে ফেলেছে সময়। বলা হয়, এসব বাড়ির কোনো কোনোটির বয়স ৭০০ বছরেরও বেশি!
কোনো এক প্রাগৈতিহাসিক কালে শাহাদ পর্বতের অগ্ন্যুত্পাতের ফলে জন্ম নিয়েছিল এই পাহাড়গুলো। আগ্নেয়শিলা আর ছাই দিয়ে তৈরি এই পাহাড়গুলো বাড়ি বানানোর জন্য বেশ ভালো।
কিন্তু এই বিরান এলাকায় এসে বাড়ি বানাবে কে? কিংবদন্তি বলে, খ্রিষ্টীয় ১৩ শতকের কোনো একসময়ে মঙ্গল দস্যুদের তাড়া খেয়ে এই কান্দোভানে ঢুকেছিল একদল মানুষ। আপাতত পাহাড়ের গুহায় গা বাঁচানোই উদ্দেশ্য ছিল। কিন্তু কালক্রমে এখানেই থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় তারা।
সেই থেকে এই গ্রামটি আজও দিব্যি বেঁচে আছে। বেঁচে আছে এবং যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। বাইরের খোলসটা পাহাড়ের হলেও ভেতরের বাড়িগুলোতে লেগেছে আধুনিকতার ছোঁয়া। বিদ্যুত্, পানির আধুনিক সুবিধা পৌঁছে গেছে ঘরে ঘরে। শুধু কি তাই? পাহাড়ের গুহায় এখন গা মেলেছে এক পাঁচতারা হোটেলও। নাম ‘রকি হোটেল’। সর্বাধুনিক সুবিধা নিয়ে এই হোটেলটিও কান্দোভানের বড় আকর্ষণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রাচীন জনপদ, পাহাড়ে বসবাস, পাঁচতারা হোটেল—সবই আছে। কিন্তু পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ এর কোনোটিই নয়। কি বলুন তো? পানি!
হ্যাঁ, এখানকার খনিজ পানি নাকি কিডনি রোগের খুব উপশম করে। তাই দলে দলে অসুস্থ লোকজন এখন পাড়ি জমাচ্ছেন কান্দোভানে। যাবেন নাকি? যাওয়ার আগে ছবিগুলো দেখে নিন।

সুত্র: প্রথম আলো তারিখ: ১২-০৩-২০১০

No comments: