অভিযোগ আছে, বাঙালির ভ্রমণের ঐতিহ্য নেই। একসময় সমুদ্র পাড়ি দিয়ে বিলেত যেতেও দারুণ ভয় ছিল, মায়েরা কিছুতেই সন্তানকে ছাড়তে চাইতেন না। তবে সেসব দিন গত হয়েছে। শিক্ষা, ব্যবসা, তথা জীবিকার খোঁজে বাঙালি বিশ্ব দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এখন। কিন্তু প্রকৃত ভ্রমণে এখনো অভ্যস্ত হয়ে ওঠেনি। অথচ বিশ্বের অনেক দেশেই মানুষ বছরের শুরু থেকেই টাকা জমানো শুরু করে, গ্রীষ্মের ছুটিতে কোথাও না-কোথাও বেড়াতে তাদের যেতেই হবে। বাকি সময়টায় তাই হাড়ভাঙা পরিশ্রমেও তাদের ক্লান্তি নেই। তারা জানে, সামনে আছে তাদের জন্য দারুণ উপভোগ্য এক ছুটি—যে ছুটি কাটিয়ে এসেই আবার ঝাঁপিয়ে পড়বে কাজে, নব উদ্যমে।
আমাদের দেশের মানুষের সামর্থ্য বেড়েছে, আগের চেয়ে বাংলাদেশ শিক্ষাদীক্ষায় অনেক এগিয়েছে। তাহলে ভ্রমণেই কেন পিছিয়ে থাকবে, হিল্লি-দিল্লি ঘুরে বেড়াতেই হবে, তার মানে নেই। যার সামর্থ্য কম, সে বছরে একবার হলেও দেশের ভেতরেই নতুন কোথাও বেরিয়ে আসতে পারে। যে কোনো দিন সমুদ্র দেখেনি, সে সমুদ্র দেখবে না? কক্সবাজার, কুয়াকাটা কি খুব দূরে? যে বন দেখেনি, পাহাড় দেখেনি, তার জন্য কি সুন্দরবন, পার্বত্য চট্টগ্রাম দূরদেশ? যাদের সামর্থ্য আছে, তাদের গন্তব্য হতে পারে দেশের সীমানা পেরিয়ে অন্য দেশের কোথাও।
‘আমরা সবাই মৃত্যুর কাছে আত্মসমর্পণ করি, কিন্তু জীবনকে কেউ স্বেচ্ছায় পরিত্যাগ করি না, কেউ জীবন থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নিই না’ ঔপন্যাসিক গ্রাহাম গ্রিন লিখেছিলেন এ কথাটি। তাই ভ্রমণ হতে পারে সাইকেলে, বাসে-ট্রেনে, নৌকায় কিংবা বিমানে; যার যার সাধ্যমতো, ঘুরে আসা যায় দেশ-বিদেশের দর্শনীয় স্থানগুলোয়। সময় কারও জন্য বসে থাকে না। ২০ বছর পর হয়তো উপলব্ধি হবে, কত কিছু দেখা হয়নি, করা হয়নি—অথচ সমবয়সী অনেকেই কত জায়গায় ঘুরে এসেছে। তাদের তুলনায় সামর্থ্য তো কোনো অংশেই কম ছিল না, শুধু ঘাটতি ছিল ইচ্ছায়, পরিকল্পনায়। কাজেই বছরান্তে কিংবা অন্য যেকোনো সুবিধাজনক সময়ে সব দ্বিধা, জড়তা ঝেড়ে ফেলে বেরিয়ে পড়তে হবে, ঘর থেকে দুই পা ফেলে আবিষ্কার করতে হবে স্বপ্নকে, আহরণ করতে হবে বেঁচে থাকার আরও আনন্দ, আরও প্রাণশক্তি। অন্য আলোর জন্য এ রকম চমকপ্রদ ভ্রমণের একটি তালিকা করে দিয়েছেন খসরু চৌধুরী, মুসা ইব্রাহীম ও সিমু নাসের
চলো চলো কেওক্রাডং
যাঁরা পাহাড় ভালোবাসেন, কেওক্রাডং তাঁদের আকর্ষণ করবেই।
বান্দরবানের রুমা বাজার থেকে কেওক্রাডংয়ে যাওয়ার এখন তিনটি পথ। একটি পথে ঝিরিকে প্রায় ছয় ঘণ্টায় ৫৩ বার এপার-ওপার করে বগা লেকে পৌঁছানো যায়। তারপর দার্জিলিংপাড়া হয়ে কেওক্রাডংয়ে পৌঁছাতে লাগে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা সময়। এ পথই সবচেয়ে জনপ্রিয়। তবে গাড়িতেও যাওয়া যায়। রুমা বাজার থেকে উত্তর-পশ্চিমে গেলে ঘণ্টা দেড়েক পর শুরু গাড়ির পথ। প্রায় তিন ঘণ্টায় এ পথে গাড়িতে করে বগা লেক স্পর্শ করার পর আগের পথেই দার্জিলিংপাড়া হয়ে কেওক্রাডং অবধি চলে যাওয়া যায়।
বর্ষায় কেওক্রাডংয়ে গেলে বিচিত্র অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়। পাহাড়ের কোলে মেঘের আলিঙ্গন দেখার জন্য আমরা ভারতের দার্জিলিং, সিকিম, শিলং, চেরাপুঞ্জি চলে যাই আকছার। কিন্তু নিজ দেশেই যে পাহাড়ের এমন রূপ আছে, যা বহু বিচিত্রতায় ভরা, তা আমরা খুব কমই উপলব্ধি করার চেষ্টায় নামি। বর্ষায় কেওক্রাডং বিজয়ের সময় সহজেই মেঘের সঙ্গে কোলাকুলি করা যায়। কেওক্রাডংয়ে মেঘের ভেতর দিয়ে হাঁটছি—ভাবুন একবার! শুধু বর্ষা নয়, কেওক্রাডং অভিযান সব সময়ই উপভোগ্য হতে বাধ্য।
সমুদ্রের নাম হাওর
চলো যাই সমুদ্রে। কেউ এই প্রস্তাব দিলেই যে ছবিটা মনে আসে—বাসের টিকিট করো রে, হোটেল বুকিং দাও রে। তারপর ছুটে চলো দেশের দক্ষিণে, কক্সবাজারে। কিন্তু আপনার বাহনটা যদি কোনো কারণে দক্ষিণের বদলে দেশের পূর্বদিকে রওনা হয়ে যায়, তাহলেও কিন্তু আপনাকে দেখা দিতে পারে এক সমুদ্র, সেটাও দিগন্ত বিস্তৃত। যত দূর চোখ যাবে, শুধু পানি আর পানি। আর এই সমুদ্রের নাম হাওর, যার কূল নাই কিনার নাই। আর মজার ব্যাপার হলো হাওর শব্দটার উৎপত্তিও কিন্তু ওই সমুদ্র থেকেই।
দেশের পূর্ব-উত্তর কোণের দুই জেলা সুনামগঞ্জ আর কিশোরগঞ্জ। শীতকালে এই জেলা দুটির বিশাল এক অংশ সবুজ ধানের জমি। কচি ফসলের বুকে সেখানে ঢেউ খেলে বেড়ায় বাতাস। বর্ষা এলেই পাল্টে যায় তার রূপ। সোনালি ধানের গোড়া মাড়িয়ে জমতে থাকে পাহাড়ি ঢলের পানি। দেখতে দেখতেই ভরন্ত শরীরে ছলাৎ ছলাৎ সুরে আসে আহ্বান। দূরে নীল আকাশ উপুড় হয়ে পাহারা দেয় তাকে। এর মাঝেই নীলচে আবছায়া হয়ে জেগে থাকে বিচ্ছিন্ন জনপদ।
আকাশে গোল চাঁদ। গলে গলে পড়ছে জোসনা। এমন রাতে যদি ছইনৌকা নিয়ে বেরিয়ে পড়েন হাওরের বুকে, তবে সেই জোসনা নিশ্চিত ঢুকে যাবে আপনার শরীরে। দূরের নৌকা থেকে ভেসে আসা লোকগানের সুরে গুনগুনিয়ে উঠবেন আপনিও।
হরিণের অরণ্যে
দেশের অভ্যন্তরে কয়েক দিনের ছুটির আনন্দে ভেসে যেতে সুন্দরবন ঘোরার বিকল্প নেই।
তিন-চার দিন সময় না নিয়ে সুন্দরবনে গেলে সে ভ্রমণ প্রায় অর্থহীন। ঢাকা-খুলনা বাসে যাতায়াত করতেই কুড়ি ঘণ্টা চলে যায়। তারপর খুলনা থেকে সুন্দরবন সীমানায় পৌঁছাতে লাগে সাড়ে তিন ঘণ্টা। তাই যাঁরা অত্যুৎসাহী; গাছপালা, নদীর জোয়ার-ভাটা, বনচারীদের নৌকা, বনের টহলফাঁড়ি, বিশাল আকাশ আর গৈরিক জলরাশির মধ্যে দিগন্তজোড়া সবুজ অরণ্যানী যাঁদের আলোড়িত করে না, তাঁদের জন্য এই যাতায়াতের সময়টা ক্লান্তিকর। অভয়ারণ্যে নৌকা ভিড়লে ছোট ডিঙিতে পর্যটকদের বনের খালে ঘোরানো হয়। খাল ভ্রমণে পর্যটকেরা নানা রকমের পাখি, সাপ, গুইসাপ, ভোঁদর, ঝোপঝাড়ে লুুকানো হরিণ ইত্যাদি দেখতে পারেন। একই খালে জোয়ার-ভাটার দৃশ্য, প্রাণিকুলের চলাচল দুই রকম। ভাটায় প্রাণী বেশি দেখা যায়, তবে ছোট খালগুলোতে নৌকা ঢুকতে পারে না। জোয়ারের সময় সাপ, বাঘ প্রভৃতি খাল পারাপার করে। পাখি কম দেখা যায়।
হরিণ দেখতে আপনাকে ঘাসের মাঠে যেতে হবে। এ সময় পর্যটকদের দল বেঁধে গাইড ও বনরক্ষী সঙ্গে নিয়ে যাওয়া উচিত। অনেক সময় বাঘও ঝোপঝাড়ের আড়াল নিয়ে হরিণের দলের ওপর চোখ রাখে।
ডুলাহাজরার প্রাণীর মেলায়
চট্টগ্রাম শহর থেকে কক্সবাজারে যাওয়ার রাস্তার পূর্ব পাশে ডুলাহাজরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাফারি পার্ক। চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি গাড়িতে দুই ঘণ্টা লাগে। পার্কে ঢোকার আগে নেচার ইন্টারপ্রিটেশন সেন্টার দেখে নেওয়া ভালো। এখানে জঙ্গলের কোন কোন স্তরে কী কী ধরনের প্রাণী থাকে, খাদ্য-খাদক সম্পর্ক দেখার সুযোগ রয়েছে।
পার্কের ভেতর ছাড়া অবস্থায় চিত্রা হরিণ, শাম্বার হরিণ দেখা যায়। গয়ালও ছাড়া অবস্থায় রয়েছে। গণ্ডিতে রয়েছে মায়া হরিণ, পারা হরিণ। বাঘ, ভালুক, হাতি, সিংহ, জলহস্তী, ওয়াইল্ডবিস্ট আরও অনেক ধরনের প্রাণী। পার্কে দুটো নজর মিনারও আছে। সেখানে চড়ে আশপাশের পাহাড় অরণ্যানী দেখা যায়।
পার্ক সারা বছরই খোলা থাকে। তবে ভ্রমণের জন্য শীতকালই আদর্শ সময়।
ডুলাহাজরা সাফারি পার্ক থেকে কক্সবাজার এক ঘণ্টার দূরত্ব। লামা, আলীকদমও এক-দেড় ঘণ্টার দূরত্বে অবস্থিত। আলীকদম যাওয়ার পথে ফাসিয়াখালী এলাকায় বর্ষায় মাঝেমধ্যে বুনোহাতির পাল দেখা যায় পাশের পাহাড়ে চরতে। মিরিঞ্জা পাহাড়শ্রেণীর প্রেক্ষাপটে সে দৃশ্য বহুদিন মনে রাখার মতো।
ইনানীর নির্জনতার খোঁজে
যাঁরা ভিড়ভাট্টা এড়িয়ে একটু নির্জনতায় বেড়াতে চান, তাঁদের জন্য উত্তম জায়গা ইনানী সমুদ্রসৈকত। যদিও এর ধারে-কাছেই আছে বাংলাদেশের বিখ্যাত দুটি পর্যটন স্থান—কক্সবাজার ও সেন্ট মার্টিন। তবু ইনানীই সেরা। কারণ, এখানে গেলে পাওয়া যায় প্রবাল দ্বীপ আর সমুদ্রসৈকত দুটোরই আমেজ। বোনাস হিসেবে ওই নির্জনতা আর যাত্রাপথের অদ্ভুত সৌন্দর্য।
কক্সবাজারের সমুদ্রসৈকতের গিজগিজ করা মানুষ আর একঘেয়ে ঢেউ গুনতে গুনতে ক্লান্ত হয়ে গেলে খোলা জিপে করে ইনানীর রাস্তা ধরাটা অত্যন্ত বুদ্ধিমানের কাজ। মেরিন ড্রাইভ ধরে যেতে যেতে চোখে পড়বে বাঁয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা নিঃসঙ্গ পাহাড় আর ডানে সদা গর্জায়মান সমুদ্র। এরপর প্রবালে ভরপুর সৈকত শুধু যেন অপেক্ষা করছে আপনারই জন্য। বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়ছে এখানে-ওখানে। সূর্যটা উল্টোদিকে মুখ করে সেই আছড়ে পড়া ঢেউয়ের বাষ্পে তৈরি করছে রংধনু। বাতাসের ফিসফিসানি ছাড়া আর কি নির্জন চারদিক! চাইলে আপনিও একটু ফিসফিস করে কথা বলতে পারবেন সেখানে সমুদ্রের সঙ্গে!
দেশ ছাড়িয়ে ঘুরে আসা যায় ভিন দেশের দর্শনীয় স্থানগুলোতেও। ঘরের কাছেই আছে তাজমহল, হিমালয়; আরেকটু দূরে আছে মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ডের মনোমুগ্ধকর সব দ্বীপ; আছে চীনের প্রাচীর। কিন্তু পরিকল্পনা হয় যদি মহাদেশ ছাড়িয়ে আরও দূরে, তাহলে পাড়ি জমানো যায় নিচের কয়েকটি বিস্ময়কর গন্তব্যেও। কোনোটি বিশিষ্ট এর সুদীর্ঘ প্রত্নতাত্ত্বিক ইতিহাসের কারণে, কোনোটি আবার অভাবনীয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য।
প্রেমের সমাধি মন্দিরে
গত কয়েক যুগ ধরে লাখ লাখ দর্শনার্থী ভ্রমণ করেছেন ভারতের তাজমহল। শাহজাহানের প্রিয়তম স্ত্রীর স্মৃতিকে চিরস্মরণীয় করে রাখতে তৈরি হয়েছিল এই সমাধিসৌধ। স্ত্রী মমতাজমহল ১৬৩১ সালে সন্তান জন্মদানের সময় মারা গেলে আগ্রার যুমনা নদীর তীরে তাঁকে সমাহিত করা হয় এবং সিদ্ধান্ত হয় তাজমহল গড়ার। আজও তাজমহল দুনিয়াজুড়ে প্রতীক হয়ে আছে প্রেম-ভালোবাসার। তাজমহল পরিদর্শনে এখন টিকিটের প্রয়োজন হয়। ক্ষয়িষ্ণু তাজমহলের মার্বেল পাথরের সৌন্দর্য অটুট রাখতে কোটি কোটি টাকার পুনর্নির্মাণের কাজ হাতে নিয়েছে ভারত সরকার।
পাথরের পেটরা
পেটরা এসেছে গ্রিক শব্দ থেকে, যার অর্থ পাথর। কিন্তু আরবি নাম আল-মাদিনা আল-ওয়ার্দাহ, অর্থ: গোলাপি রঙের শহর। পশ্চিম জর্ডানে অবস্থিত এই পেটরা নগরের পত্তন ঘটে খ্রিষ্টপূর্ব প্রথম শতাব্দীতে। এক আরব উপজাতি—নেবাতিনস, যারা একে তাদের বাণিজ্যিক রাজ্যের রাজধানী হিসেবে গড়ে তোলে। সুউচ্চ দেয়াল আর পাহাড়শ্রেণীতে ঘেরা কৌশলগতভাবে নিরাপদ সুরক্ষা ভেবে একে রাজধানী হিসেবে পছন্দ করেছিল নেবাতিনসরা। এ শহরের প্রবেশদ্বার ‘সিক’ গলির মতো সরু, যে কারণে কোথাও কোথাও দুটির বেশি উট পাশাপাশি ঢুকতে পারে না।
পেটরার সবচেয়ে দর্শনীয় বস্তু হচ্ছে এখানকার দালানকোঠা। দীর্ঘদিন বিস্মৃত থাকার পর সুইস পরিব্রাজক জোহান লুডভিগ বুরকহের্ডট পেটরার পুনঃআবিষ্কারক।
বর্তমানে ভ্রমণকারীদের পদচারণে সারা বছর মুখরিত থাকে পেটরা নগর।
শিল্পের জাদুঘর
প্যারিসের ইফেল টাওয়ার ও অন্যান্য জায়গা ঘোরা শেষে সোজা গন্তব্য লুভর জাদুঘর। দেখা মিলবে মোনালিসার। দুনিয়ার সেরা সব শিল্পকর্মের সংগ্রহ রয়েছে লুভর জাদুঘরে। সব আসল শিল্পকর্ম। প্রদর্শনীর শুরু হয়েছে রাজা প্রথম ফ্রাসোয়াকে (১৫৪৬) দিয়ে—মধ্য উনিশ শতক পর্যন্ত শত শত শিল্পকর্ম স্থান পেয়েছে এই জাদুঘরে।
লুভর পৃথিবীর তাবৎ জাদুঘরের মধ্যে সেরা। বিপ্লবী ফরাসি সরকারের আদেশে ১৭৯৩ সালে মধ্যযুগীয় এক প্রাসাদকে খুলে দেওয়া হয় জনগণের জন্য। তার আগে এর পরিচর্যা করেন নেপোলিয়ন। তিনি শিল্পের শক্তি সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল ছিলেন, যে কারণে এখানে সমাবেশ ঘটিয়েছিলেন প্রতিভাবান সব শিল্পীর, শিল্পের। লুভর সে কারণে একই সঙ্গে হয়ে উঠেছিল শিল্পীদের শিক্ষাপীঠও।
প্রকৃতির বিস্ময়
গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের সৌন্দর্যের কোনো তুলনা হয় না। তেমনি পুরো গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন একবারে ঘুরে দেখাও সম্ভব না। গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের সাউথ রিম ছয় হাজার ফুট গভীর, ২৭৭ মাইল দীর্ঘ, আর ১৮ মাইল চওড়া। এ পথে কেউ ভ্রমণ শুরু করলে কত দিনে শেষ করতে পারবে, নির্দিষ্ট করে বলা মুশকিল।
তাই ন্যাশনাল পার্ক কর্তৃপক্ষের পরামর্শ, গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন ভ্রমণ শুরু করা উচিত নর্থ রিম থেকে। দক্ষিণের চেয়ে এ অংশের প্রশস্ততা কম—সাত মাইল। এই পথে দুই দিনের ভ্রমণেই সার সার পাহাড়শ্রেণীর দেখা মিলবে, যা দুই বিলিয়ন বছরেরও বেশি পুরোনো শিলায় গঠিত। আরও সামনে গেলে একে একে স্পষ্ট হয়ে উঠবে উদ্ভিদজগতের বিস্ময়কর সব বৈচিত্র্য। প্রকৃতি সব বিস্ময় যেন ঢেলে দিয়েছে কানাডা থেকে মেক্সিকো পর্যন্ত বিস্তৃত এই ক্যানিয়নে। গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন ভ্রমণ বিস্ময়কর এক অভিজ্ঞতা হয়ে থাকবে সারা জীবনের জন্য।
No comments:
Post a Comment