জীবনের যা কিছু অর্জন, তা তিনি বিলিয়ে দিয়েছেন মানুষের কল্যাণে। অর্থবিত্ত, সংসার—কোনো কিছুই তাঁকে টানেনি। ছোটবেলা থেকে পশুপাখির প্রতি ছিল তাঁর নিগূঢ় প্রেম। চাকরিজীবন থেকে অবসর নিয়েছেন নয় বছর। মানুষের সেবা করবেন সেই শক্তি বা অর্থ—এখন তাঁর নেই। তাই পশু-পাখির সেবায় ব্যস্ত রাখেন নিজেকে। এলাকার প্রায় ৩০টি কুকুর ও ১৫টি বেড়াল এখন তাঁর সঙ্গী। নিজে না খেয়ে, না পরে ওই কুকুর-বেড়ালগুলোকে খাওয়ান। তিনি মনে করেন, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় এসব প্রাণীর বেঁচে থাকা জরুরি।
এ পশুপ্রেমি মানুষটির নাম ব্রজগোপাল সাহা। বাড়ি পাবনা সদর উপজেলার দোগাছী ইউনিয়নের চিথলী গ্রামে। ‘কালাদা’ বললে পাবনা শহরের এ-প্রান্ত থেকে ও-প্রান্তের সবাই তাঁকে চেনেন। একটি ঝোলা ব্যাগ, তার মধ্যে কিছু পাউরুটি, বিস্কুট, রাজভোগ, রসগোল্লা, বিরিয়ানি, রুটি, দুধ নিয়ে সারাক্ষণ শহরে ঘুরে বেড়ান কুকুর-বেড়াল-পাখিকে খাওয়ানোর জন্য। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পশুপাখি খুঁজে খুঁজে খাওয়ান। তিনি শুধু এদের খাবারই দেন না; অসুখ-বিসুখে চিকিৎসক দেখানো, ওষুধ খাওয়ানো, মাঝেমধ্যে গোসল করানো—সবই করেন।
তিনি বলেন, ‘সৃষ্টিকর্তা পৃথিবীতে কোনো প্রাণীকেই অকারণে তৈরি করেননি। পশুপাখি পরিবেশের জন্য দরকার। মানুষের প্রয়োজনেই পশুপাখিকে বাঁচিয়ে রাখা জরুরি। আর সেজন্যই এদের নিয়ে থাকি।
১৯৬৩ সালে তিনি পাবনা জিলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। ১৯৬৬ সালে অকুপেশনাল থেরাপিস্ট (বৃত্তিমূলক শিক্ষক) পদে পাবনা মানসিক হাসপাতালে চাকরিতে যোগ দেন।
পাবনা জেলা ক্রীড়া সংস্থায় একজন ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে জড়িত ছিলেন দীর্ঘদিন।
সারোয়ার উল্লাস
সুত্র: প্রথম আলো তারিখ: ৩০-০৭-২০১০
No comments:
Post a Comment